অসাবধানী: বিধি-নিষেধকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চলছে মাছের বাজারে বিকিকিনি। গোঘাটের কামারপুকুর ডাকবাংলো সব্জি বাজারে।
সংক্রমণ একটু কমতেই বিধিনিষেধ ফের শিকেয় উঠছে। হাওড়া ও হুগলি— দুই জেলায় রাস্তাঘাটে বেরোতেই তা মালুম হচ্ছে। এই ছবি দেখে ফের আশঙ্কার মেঘ ঘনাচ্ছে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের একাংশের মনে। তাঁরা বলছেন, দ্বিতীয় ঢেউ এখনও বিদায় নেয়নি। যথাযথ ভাবে মাস্ক না-পরে বা দূরত্ববিধি ভুলে অবাধে ঘোরাঘুরি করলে ফের পরিস্থিতি বিগড়ে যেতে পারে। তা ছাড়া, তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কাও রয়েছে।
গত কয়েক দিন ধরে গ্রামীণ হাওড়ায় নির্দিষ্ট সময়ের বাইরেও দোকান-বাজার খোলা থাকছে। সড়কপথে শুধু বাস বন্ধ। অটো, টোটো, ভ্যানো— সবই চলছে। তা-ও যাত্রী বোঝাই করে। কড়াকড়িকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে যে ভাবে শারীরিক দূরত্ববিধি উপেক্ষা করে এক শ্রেণির মানুষ রাস্তায় নামছেন, তাতে প্রমাদ গুনছেন চিকিৎসক ও সাধারণ মানুষের একাংশ। তাঁদের আশঙ্কা, পুলিশি নজরদারি না বাড়লে ফের সংক্রমণ বাড়বে।
করোনা মোকাবিলায় ট্রেন, বাস-সহ সব রকম গণ-পরিবহণ বন্ধ। অফিস-কাছারি, শপিং মল, সিনেমা হলও বন্ধ রাখার নির্দেশ রয়েছে। তবে, মুদি দোকান, আনাজের বাজার, ফলের দোকান সকাল ৭টা থেকে ১০টা, মিষ্টির দোকান সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা, শাড়ি ও সোনার দোকান দুপুর ১২টা থেকে ৩টে পর্যন্ত খোলা রাখতে বলেছে রাজ্য সরকার। খুচরো দোকানও নির্দিষ্ট সময় এবং বিকেল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত হোটেল খোলার অনুমতি মেলে।
ইঞ্জিন ভ্যানে করে গাদাগাদি করে যাতায়াত বাগনানের ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে।
কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে দেখা যাচ্ছে, সকাল ৭টা থেকে বেলা ১০টা পর্যন্ত যে সব দোকান খোলার কথা, সেগুলি খোলা থাকছে অনেক বেলা পর্যন্ত। হোটেলও সময়ের বাইরে খোলা থাকছে। বাগনানে কয়েকটি মিষ্টির দোকান খোলা থাকছে অনেক রাত পর্যন্ত। খদ্দেরের ভিড়ও লেগে থাকছে। অভিযোগ, সব দেখেও পুলিশ নীরব। হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, নজরদারি
বাড়ানো হবে।
বাগনানে বিভিন্ন রুটের অটো চলাচল শুরু হয়েছে। কড়াকড়ির অজুহাত দেখিয়ে অটোচালক অনেক বেশি ভাড়া নিচ্ছেন। আমতা থেকে রানিহাটি পর্যন্ত অবাধে চলছে অটো-টোটো। উলুবেড়িয়ায় যাত্রী বোঝাই ভ্যানো ছুটছে মুম্বই রোডে। উলুবেড়িয়ার বাণীতবলার বাসিন্দা সাইদুর রহমান বলেন, ‘‘আবার মানুষ যে ভাবে বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে রাস্তায় নেমে পড়েছেন, মনে হচ্ছে করোনা যেন আর নেই!’’
হুগলিতেও, বিশেষত শহুরে এলাকায় অনেক জায়গায় নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে দোকান খোলা থাকতে দেখা যাচ্ছে। শ্রীরামপুর স্টেশন চত্বর, শীতলাতলা, উত্তরপাড়া, চুঁচুড়া— সব জায়গাতেই ছবিটা কমবেশি এক। বেশির ভাগ জায়গাতেই মাস্ক পরার সচেতনতা বাড়লেও দূরত্ববিধি লঙ্ঘিত হচ্ছে। শুক্রবার পান্ডুয়ায় আনাজ বাজার, তেলিপাড়া মোড়, কালনা রোড, স্টেশন বাজারে ভালই ভিড় দেখা গেল।
হুগলি জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, স্বাস্থ্যবিধি এবং কড়াকড়ি মানতে প্রচার চালানো হয়েছে। পুলিশ ধরপাকড়ও করছে। প্রয়োজনে নজরদারি বাড়ানো হবে।