পান্ডুয়া গ্রামীণ হাসপাতাল পরিদর্শনে সাংসদ। নিজস্ব চিত্র।
পান্ডুয়া গ্রামীণ হাসপাতালে পরিষেবা দেখার দায়িত্ব দলের নেতাকে দিয়ে বিতর্কে জড়ালেন হুগলির তৃণমূল সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার রচনার এই ঘোষণায় প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। শোরগোল তৃণমূলেও।
এ দিন দুপুরে হাসপাতাল পরিদর্শনে এসে ল্যাবরেটরি, এক্স রে ঘর, অন্তর্বিভাগ, অপারেশন থিয়েটার ঘুরে দেখেন রচনা। জরুরি বিভাগে তাঁকে বিভিন্ন সমস্যার কথা জানান নার্সরা। হাসপাতালের অপরিচ্ছন্নতা নিয়ে দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক মণিশঙ্কর মুখোপাধ্যায়ের কাছে অসন্তোষ প্রকাশ করেন সাংসদ। তারপরে আচমকাই সঙ্গে থাকা দলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি সঞ্জয় ঘোষকে বলেন, ‘‘হাসপাতালে আসা মানুষদের পরিষেবা দেওয়ার জন্য তোমাকে দায়িত্ব দেওয়া হল।’’ রোগী পরিষেবা, হাসপাতাল চত্বরে অ্যাসিড-ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো এবং রোগীর আত্মীয়দের জন্য পাস তৈরি, এই তিন বিষয় তাঁকে দেখতে বলেন সাংসদ। শেষে জানান, তিনি এক মাস পরে ফের আসবেন পরিস্থিতি দেখতে।
সঞ্জয়কে এই দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠেছে, তেনই কোনও সাংসদ এই অক্তিয়ার আছে কি না, প্রশ্ন তা নিয়েও। পান্ডুয়ার প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক আমজাদ হোসেন বলেন, ‘‘সরকারি হাসপাতাল পরিচালনার জন্য রোগীকল্যাণ সমিতি আছে। পঞ্চায়েত সমিতির স্বাস্থ্য দফতর আছে। কী করে এক জন সাংসদ রাজনৈতিক নেতাকে এ রকম দায়িত্ব দেন, বুঝতে পারছি না। শুধু সাধারণ মানুষকে বোকা বানানো হচ্ছে।’’ আমজাদের সংযোজন, ‘‘আমি ৮ বছর আগে হাসপাতালে ১০০ শয্যার ব্যবস্থা বিধানসভায় পাস করিয়েছিলাম। এখনও তা হয়নি, সে বিষয়ে তিনি কিছু বললেন না। পাগলামি ছাড়া কিছু না।’’ সঞ্জয়কে হাসপাতালের দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে প্রশ্নে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক তথা হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির সভাপতি রত্না দে নাগের প্রতিক্রিয়া, ‘‘এ বিষয়ে কিছু বলব না।’’
রচনা অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে হাসপাতালের উন্নতির চেষ্টা করার আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু একইসঙ্গে বলেন, ‘‘হাসপাতাল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা দরকার। এখন যে ভাবে চলছে, সেটা চলতে পারে না।’’ এর পরেই নির্দেশের সুরে সাংসদ জানিয়ে দেন, হাসপাতাল পরিষ্কার ও নিরাপত্তারক্ষী রাখতে হবে। এক জন রোগীর জন্য ১০ জন লোক ঢুকতে পারবেন না।