Uluberia

গতি নেই মুম্বই রোডে, ‘টোল’ আদায় নিয়ে প্রশ্ন

এনএইচএআই (জাতীয় সড়ক সংস্থা) সূত্রের খবর, সম্প্রসারিত হওয়ার পরে এই রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা বহু গুণ বেড়েছে। এখন দৈনিক গড়ে ৭০ হাজার ইউনিট গাড়ি (ছোট গাড়ি এক ইউনিট।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০২৩ ০৭:৪৩
Share:

ধূলাগড়ে টোল দেওয়ার লম্বা লাইন। নিজস্ব চিত্র

‘সোনালি চতুর্ভুজ’ প্রকল্পে দুই লেনের মুম্বই রোড চার লেনে পরিণত হয় ২০০৩ সালে। এর পরেও সম্প্রসারণের কাজ চলে। ২০১২ সাল নাগাদ হাওড়ায় ওই জাতীয় সড়কের বেশিরভাগ অংশই ছয় লেনে রূপান্তরিত হয়। কিন্তু যানবাহনের গতি সে অর্থে বাড়েনি। বেড়ে চলেছে শুধু দুর্ঘটনা। কিছু জায়গায় জমিজটের কারণে অবশ্য সড়কটি চার লেনেরই থেকে গিয়েছে এখনও।

Advertisement

এনএইচএআই (জাতীয় সড়ক সংস্থা) সূত্রের খবর, সম্প্রসারিত হওয়ার পরে এই রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা বহু গুণ বেড়েছে। এখন দৈনিক গড়ে ৭০ হাজার ইউনিট গাড়ি (ছোট গাড়ি এক ইউনিট। বড় গাড়িকে তিন ইউনিট ধরা হয়) চলে এই সড়কে। কিন্তু গাড়ির গতি যে সেই তুলনায় বাড়েনি, মানছেন এনএইচএআই কর্তারা।

গাড়িচালকদের অভিযোগ, হাওড়া জেলায় এই সড়কে যানজট লেগেই থাকে। সেই কারণে গাড়ির গতি বাড়ানো যায় না। অথচ, ধূলাগড় টোল প্লাজ়ায় টোলের হার প্রতি বছর বেড়েই চলেছে। তাঁদের প্রশ্ন, মোটা টাকা ‘টোল’ দিয়েও সময়ে গন্তব্যে পৌঁছনো যাচ্ছে না। তাতে লাভ কী হচ্ছে?

Advertisement

জবরদখল যে সুষ্ঠু ভাবে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে বড় সমস্যা, তা স্বীকার করেন এনএইচএআই-এর কলকাতা প্রকল্প রূপায়ণ ইউনিটের এক পদস্থ কর্তা। এই ইউনিটের হাতেই রয়েছে মুম্বই রোডের হাওড়া জেলার অংশটি। সংস্থার ওই কর্তা জানান, জবরদখলের জেরে শুধু যে যান চলাচলই ব্যাহত হচ্ছে না, দুর্ঘটনাও ঘটছে।

ওই প্রকল্প ইউনিট সূত্রের খবর, ২০২২ সালের ১ নভেম্বর কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে চিঠি দিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় জাতীয় সড়কগুলির ধারে থাকা জবরদখল সরাতে তাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকদের উদ্যোগী হতে বলা হয়। একইসঙ্গে রাজ্য সরকারকেও চিঠি দিয়ে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে অনুরোধ করা হয়।

সেই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে মুম্বই রোডের ভারপ্রাপ্ত এনএইচএআই-এর কলকাতা প্রকল্প রূপায়ণ ইউনিটের পক্ষ থেকে জবরদখল উচ্ছেদ, বেআইনি পার্কিং বন্ধ করতে সহায়তা চেয়ে হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশ এবং হাওড়া সিটি পুলিশ কমিশনারকে বার বার চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু পুলিশের তরফে কোনও সহায়তা মেলেনি বলে এনএইচএআই কর্তাদের অভিযোগ। আরও অভিযোগ, যে সব বেআইনি ‘কাট’ আছে, সেগুলি বন্ধ করতে সংস্থা নিজে থেকে উদ্যোগী হলেও গ্রামবাসীরা ফের তা কেটে দেন। এই কাজেও পুলিশের সহায়তা মেলে না বলে অভিযোগ।

পুলিশ অভিযোগ মানেনি। হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, ‘‘কয়েক দিন আগেই উলুবেড়িয়ার কালীতলায় জাতীয় সড়ক সংস্থা জবরখল উচ্ছেদ করতে গেলে পুলিশ তাদের সঙ্গে ছিল। প্রয়োজনে সব রকম সহায়তা করা হয়।’’

জাতীয় সড়ক সংস্থার অবশ্য পাল্টা দাবি, এমন বিক্ষিপ্ত ভাবে পুলিশি সহায়তা দিলে হবে না। সংস্থার এক কর্তা জানান, তাঁরা চান নিয়মিত অভিযান। পুলিশের অভাবে সেটা করা যাচ্ছে না। বেআইনি পার্কিং বন্ধ করতেও পুলিশি সহায়তা মেলে না বলে তাঁর অভিযোগ।

হাওড়া জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, দুর্ঘটনা কমাতে পুলিশ নিয়মিত সচেতনতা শিবির করে। কোনও গাড়ি আইন ভাঙলে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়। একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘জবরদখল করে ব্যবসার সঙ্গে অনেকের রুটি-রুজি জড়িত। তাই রাজ্য সরকারের সবুজ সঙ্কেত না পেলে এই কাজে সার্বিক ভাবে নামা সম্ভব নয়। তাতে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে।’’

পরিস্থিতি বদলের দিশা

দেখাচ্ছেন না কেউ। ফলে, ওই জাতীয় সড়কে গাড়ির গতি কী ভাবে বাড়বে বা দুর্ঘটনা কী ভাবে কমবে, তার সদুত্তর মিলছে না। (শেষ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement