—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
যুবক বয়সে প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরির জন্য তাঁরা পরীক্ষা দিয়েছিলেন। প্যানেল বাতিল হওয়ায় চলছিল মামলা। অবশেষে এল চাকরির চিঠি। তবে এতদিনে ওই চাকরিপ্রার্থীরা বৃদ্ধ হয়েছেন। বৃহস্পতিবার পান্ডুয়া চক্র বিদ্যালয় পরিদর্শকের অফিসে নিয়োগপত্র হাতে সেই চাকরি সংক্রান্ত খোঁজ নিতে গিয়েছিলেন ৬৪ বছরের দীনবন্ধু ভট্টাচার্য এবং ৭০ বছরের অচিন্ত্য আদক। অবসরকালীন সময়ে শিক্ষকের চাকরিতে যোগ দিতে যাওয়ায় রীতিমতো শোরগোল পড়ে। তখনই জানা যায়, শুধু তাঁরাই নন। এমন নিয়োগপত্র এসেছে হুগলির ৬৬ জন বৃদ্ধের। তার মধ্যে মারা গিয়েছেন চার জন।
শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে যখন তোলপাড় রাজ্য, তখন প্রাথমিক সংসদের নিয়োগপত্র নিয়ে এমন ঘটনায় কার্যত হতবাক সকলেই। এ বিষয়ে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) দীপঙ্কর রায় জানান, নিয়োগের বিষয়টি জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যানের এক্তিয়ারভুক্ত। তাই তিনি কিছু বলতে পারবেন না।
আর ওই পদে থাকা তথা হুগলি জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্য শিল্পা নন্দী জানান, বাম আমলে (১৯৮৩ সালে) প্রাথমিক নিয়োগের একটি প্যানেল বাতিল সংক্রান্ত মামলা হাইকোর্টে চলছিল। ২০২৩ সালের ২০ ডিসেম্বর কলকাতা হাইকোর্ট ওই চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগের নির্দেশ দেয়। সেই মতোই নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে ৬৬ জনকে। তাঁদের চাকরিতে নিয়োগ কার্যকর হয়েছে ২০১৪ সালের ৮ অগস্ট থেকে।
শিল্পা বলেন, ‘‘রায় অনুযায়ী নিয়োগপত্র পাঠানোর জন্য প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের নির্দেশিকা এসেছিল। সেই মতো ৬৬ জনকে নিয়োগপত্র পাঠিয়েছিলাম। রায়ের কপিতে প্রার্থীদের নাম ও ঠিকানা থাকলেও বয়স উল্লেখ ছিল না।’’
চাকরি পেয়ে কিছুটা অবাক বছর সত্তরের অচিন্ত্যবাবু। তাঁর নতুন কর্মক্ষেত্র পান্ডুয়ার বাণীমন্দির প্রাথমিক বিদ্যালয়। তিনি বলেন, ‘‘১৯৮৩ সালে মামলা করেছিলাম। আন্দোলেন থাকা চার জন তো মারাই গেলেন! তবে চাকরি যখন পেয়েছি, করব।’’ একই সুর ৬৪ বছরের দীনবন্ধু ভট্টাচার্যের গলাতেও।
বিষয়টি নিয়ে বিরোধীরা অবশ্য কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না। বিজেপির রাজ্য নেতা তথা আইনজীবী
স্বপন পাল বলেন, ‘‘নিয়োগপত্র
কার কাছে যাচ্ছে, তা দেখার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট দফতরের। কিন্তু এ ক্ষেত্রে
তা হয়নি।’’
যদিও জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ তৃণমূলের সুবীর মুখোপাধ্যায় এর মধ্যে দফতরের ভুল দেখছেন না। তিনি বলেন, ‘‘আদালতের রায় কার্যকর করতেই হয়। সেটাই ওই দফতর করেছে।’’