খানাকুলের সর্বত্র এখন এই ছবি পরিিচত। শঙ্করপুরে ত্রিপল মাথায় ফিরছেন দুই বাসিন্দা। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ।
ধান্যগোড়ি, রাজহাটি-১, মাড়োখানা এবং জগৎপুর— খানাকুল-২ ব্লকের এই চার পঞ্চায়েত এলাকা ছাড়া আরামবাগ মহকুমার অন্যত্র বন্যার জল প্রায় নেমে গিয়েছে। মাটি জেগে ওঠা জায়গাগুলিতে ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো শুরু করেছে স্বাস্থ্য দফতর এবং পঞ্চায়েত। স্বাস্থ্য শিবির হচ্ছে। পানীয় জলের কল পরিশোধন শুরু হয়েছে। পূর্ত দফতর ভেঙে যাওয়া রাস্তা চিহ্নিত করার কাজও
শুরু করেছে।
রেশন দোকানগুলি চালু হলেও সরকারি ত্রাণে চালের দাবি কমেনি। অধিকাংশ খড়ের গাদা ভেসে যাওয়ায় গোখাদ্যের দাবিও কম নয়। তবে সব দাবিকে ছাপিয়ে ওই চার পঞ্চায়েতে ত্রিপলের জন্য ক্ষোভ-বিক্ষোভই বেশি। হুগলির জেলাশাসক দীপাপ্রিয়া পি জানিয়েছেন, ধারাবাহিক ভাবে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে ত্রিপল, চাল-সহ যাবতীয় ত্রাণ সামগ্রী দফায় দফায় পাঠানো চলছে।
রাজহাটি-১ পঞ্চায়েত এলাকার রামচন্দ্রপুরের মনোজ দোলুই, কুশালির সওকত আলি প্রমুখের অভিযোগ, “জেলা এবং মহকুমা প্রশাসনের লোকেরা এসে বলছেন, ত্রাণের কোনও অভাব হবে না। অথচ, চাল পাচ্ছি না। প্রতি বছর ত্রিপল পাই, এ বার তা-ও পাইনি।” একই অভিযোগ করেছেন ধান্যগোড়ি পঞ্চায়েত এলাকার বন্দর জেলেপাড়ার গীতা রায়, মাড়োখানা পঞ্চায়েতের চাঁদকুণ্ডুর বিমল মাইতি, পলাশপাই-২ পঞ্চায়েতের হায়াতপুরের মনোজ ঘোড়ুই প্রমুখ।
ত্রাণ নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভের কথা স্বীকার করে রাজহাটি-১ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান দেবাশিস সামুই বলেন, “বন্যা হলেই এলাকার মানুষের ত্রাণের দাবি, ক্ষোভ-বিক্ষোভ বংশ পরম্পরায় চলে আসছে। এই এলাকার চার হাজার পরিবারেরই ত্রিপলের দাবি রয়েছে। এখনও পর্যন্ত পেয়েছি ১২৮৫টি। চাল পেয়েছি ৬০ কুইন্টাল, চিঁড়ে ৩ কুইন্টাল। কিছু গোখাদ্য পেয়েছি।”
জগৎপুর পঞ্চায়েতের প্রধান প্রভাস সাউ বলেন, “ত্রিপল পেয়েছি ৯০০টি। চাল পেয়েছি ৭০ কুইন্টাল। চিঁড়ে আড়াই কুইন্টাল, শিশুখাদ্য ২৪ প্যাকেট। সবাই ত্রাণের দাবি করছেন। প্রকৃত দুঃস্থদের বেছে বেছে ত্রাণ সামগ্রী দিচ্ছি।” খানাকুলের দু’টি ব্লকের সব পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষই দুর্গত পরিবারের তুলনায় ত্রিপল কম পাওয়ার অভিযোগ করেছেন।
খানাকুল-২ ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ৩৪টি ত্রাণ শিবির কমে এ দিন ১৬টি ত্রাণ শিবির চলছে। সেখানে ৫৫০ জন দুর্গত আছেন। ১১টি পঞ্চায়েতে এখনও পর্যন্ত চালের বরাদ্দ মিলেছে ৫০০ কুইন্টাল। ত্রিপল দেওয়া হয়েছে ১০ হাজার। জলের পাউচ ১ লক্ষ ৩০ হাজার।