হাওড়ার দাশনগরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের রোড-শো। সোমবার। —নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাট-আউট বসাতে গিয়ে গাছের ডালপালা ছেঁটে এলাকায় দফায়-দফায় বিদ্যুৎ সংযোগ ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ করলেন হাওড়ার বাসিন্দাদের একাংশ থেকে বিরোধী নেতৃত্ব। হাওড়ায় সোমবার অভিষেকের রোড-শো ঘিরে এমনই অভিযোগ উঠেছে।
হাওড়ার তৃণমূল প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে এ দিন দাশনগর থেকে বালিটিকুরি মুক্তারাম স্কুলের সামনে পর্যন্ত রোড-শো করেন অভিষেক। তার প্রস্তুতি ঘিরেই বিপত্তি বাধে বলে অভিযোগ। এলাকাবাসীর একাংশের অভিযোগ, রবিবারেই দেখা গিয়েছিল, দাশনগর থেকে বালিটিকুরি সরকারি আবাসন পর্যন্ত রাস্তার দু’ধারের বহু গাছের ডাল ছেঁটে ফেলা হয়েছে। পুরো রাস্তা জুড়ে অভিষেকের অন্তত ২০ ফুট লম্বা কাট-আউট বসাতেই তা করা হয়েছিল বলে দাবি। এই কাজ করতে গিয়ে রবিবার দুপুর থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট এলাকায় দফায়-দফায় বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, বিদ্যুৎ না থাকায় অনেকে পাম্পের সাহায্যে জল তুলতেও সমস্যায় পড়েন। কিছু জায়গায় পথে নেমে বিক্ষোভ দেখান মহিলারা। পরে পুলিশ বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার ব্যবস্থা করায় সমস্যা মেটে।
এই বিষয়টিকে সামনে রেখেই সরব হয়েছেন বিরোধী নেতৃত্ব। হাওড়ার সিপিএম প্রার্থী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “এমনিতেই তৃণমূল সরকার হাওড়াকে নোংরা শহরে পরিণত করেছে। একটা মিছিলের জন্য এ ভাবে প্রকৃতিকে ধ্বংস করা এবং মানুষকে অসুবিধায় ফেলা তৃণমূলের পক্ষেই সম্ভব। এটা যেন রাজতন্ত্র!” বিজেপি প্রার্থী রথীন চক্রবর্তীও বলেন, “বিদায়ী সাংসদ থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে ওঁরা এমন অবিবেচনামূলক কাজ করলেন? বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে মানুষকে যে ভাবে কষ্ট দেওয়া হয়েছে, সেটা দেখা দরকার নির্বাচন কমিশনের।” যদিও তৃণমূলের হাওড়া সদরের জেলা সভাপতি কল্যাণ ঘোষের প্রতিক্রিয়া, “বিষয়টি নিয়ে কেউ অভিযোগ জানাননি। আমি খোঁজ নিয়ে দেখব।”
অভিষেকের রোড-শো ঘিরে এ দিন প্রশাসনিক ব্যবস্থা ছিল তুঙ্গে। ইছাপুর মোড় থেকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার রাস্তা পুলিশ বাহিনী দিয়ে মুড়ে দেওয়া হয়েছিল। হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের অধিকাংশ থানার আধিকারিক-সহ পুলিশকর্তারা ছিলেন। চলে ড্রোন-নজরদারিও। রাস্তার দু’পাশে বাঁশের ব্যারিকেডের পাশাপাশি পথচলতি মানুষের যাতায়াতের জন্য দড়ি দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। দুপুর ২টো থেকে যান চলাচল কার্যত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তবে অভিষেকের সঙ্গে তৃণমূল প্রার্থী প্রসূন বা রাজ্যের শাসকদলের অন্য কোনও নেতার ছবি, কাট-আউট তেমন দেখা যায়নি বলেই পর্যবেক্ষণ এলাকাবাসীর একাংশের।