—প্রতীকী চিত্র।
ফের চাকরি দেওয়ার নামে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বলাগড় ব্লক সভাপতি নবীন গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। নবীন অভিযোগ মানেননি। কয়েক মাস আগে একই রকম অভিযোগে দলের একাংশের হস্তক্ষেপে টাকা ফেরাতে হয়েছিল তাঁকে।
এ বার খামারগাছির যুবক চন্দ্রনাথ ঘোষের অভিযোগ, প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পেয়ে তিনি জমি বেচে সাড়ে ৬ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন নবীনকে। চাকরি মেলেনি। মাত্র নগদ ৭৫ হাজার টাকা ফেরত পেয়েছেন। এ নিয়ে স্থানীয় সিজা-কামালপুর পঞ্চায়েতে লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই যুবক। পঞ্চায়েত প্রধান পিঙ্কু ঘোষ বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। তবে যাচাই করা হয়নি।’’
নবীন শ্রীপুর-বলাগড় পঞ্চায়েতের প্রধানও। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বিষয়টি জানা নেই। সিজা-কামালপুর পঞ্চায়েতে অভিযোগ হলে প্রধান আগে ডেকে পাঠান। দেখি কী অভিযোগ হয়েছে! অনেকে অনেক অভিযোগ করেন।’’ তৃণমূলের হুগলি-শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অরিন্দম গুঁইন বলেন, ‘‘বিষয়টি শুনেছি। নির্দিষ্ট অভিযোগ এলে দল বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখবে। এমন কিছু ঘটে থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে ইডি-র হাতে গ্রেফতার হয়েছেন বলাগড়েরই যুব তৃণমূল নেতা (এখন বহিষ্কৃত) শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কুন্তল ঘোষ। একই ব্লকের তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে পর পর দু’বার একই অভিযোগ ওঠা তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিরোধীরা।
চন্দ্রনাথ জানান, তিনি ২০০৬ সালে বিএ পাশ করেন। প্রাথমিকে শিক্ষকতার জন্য দু’বছরের ডিএলএড প্রশিক্ষণ নেন। ’১৪ সালে প্রাথমিকের টেট দেন। তার পরেই নবীনের সঙ্গে যোগাযোগ। চন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘নবীনকে ২০১৪ সালেই ২ লক্ষ ১০ হাজার টাকা দিই। ২০১৬ সালের মধ্যে তিন ধাপে আরও ৪ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা দিই। পুরোটাই নগদে। চাকরি পাইনি।’’
চন্দ্রনাথের দাবি, নিজের ভুল বুঝে তিনি টাকা ফেরত চাইলে নবীন ঘোরাতে থাকেন। শেষে গত ২২ জুন নগদ ৫০ হাজার টাকা দেন। ২৭ অগস্ট ৫০ হাজার টাকার চেক দেন। সেটি ‘বাউন্স’ হয়। পরে নগদ ২৫ হাজার টাকা দেন। গত ৩ অক্টোবর সন্ধ্যায় তাঁকে শ্রীপুর-বলাগড় পঞ্চায়েতে ডেকে ৫০ হাজার টাকার একটি চেক দেন। সেটিও ভাঙানো যায়নি। চন্দ্রনাথের অভিযোগ, ওই চেকে লেখা দু’টি বানান ভুল। একটি সংখ্যার ক্ষেত্রে দু’বার কলম বোলানো হয়। ব্যাঙ্ক ওই চেক নেয়নি। তাঁর ধারণা, ইচ্ছে করেই ওই ভাবে লেখা হয়েছিল।
চন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘উনি (নবীন) এখন ফোনও ধরেন না। বাধ্য হয়ে সিজা-কামালপুর পঞ্চায়েতে লিখিত ভাবে সব জানিয়েছি। চাষ করে কোনও রকমে সংসার চলে। কেন যে টাকাটা দিতে গেলাম!’’
বিজেপি নেতা স্বপন পালের প্রতিক্রিয়া, ‘‘তৃণমূল এ ভাবেই যুব সমাজকে শেষ করেছে।’’ ডিওয়াইএফআইয়ের জেলা সভাপতি সুমন মালের মন্তব্য, ‘‘তৃণমূল আলু-পটলের মতো চাকরি বেচেছে। যাঁরা চাকরি পাননি, সর্বস্বান্ত হয়েছেন। এটি তেমনই উদাহরণ।’’