কাটা হয়েছে ডাল।
পুজোমণ্ডপ তৈরিতে অন্তরায়! তাই কেটে ফেলা হল আস্ত খেজুর গাছ। নির্বিচারে ছাঁটা হল কৃষ্ণচূড়ার ডাল।
মণ্ডপ তৈরির জন্য পরিবেশের এই ক্ষতি করার অভিযোগ উঠেছে চন্দননগরের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে অশোকপল্লি সর্বজনীন দুর্গাপুজো সমিতির বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে চন্দননগর পুরসভা এবং কমিশনারেটের দ্বারস্থ হয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পরিবেশ অ্যাকাডেমি। গাছ কাটা বা ডাল ছাঁটা নিয়ে সাফাই দিলেও ওই কাজে কোনও দফতরের অনুমতি যে নেওয়া হয়নি, তা মানছেন পুজো উদ্যোক্তারা।
মেয়র রাম চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বিষয়টি কানে এসেছে। পুরসভার তরফে অনুসন্ধান করে, পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে জেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই পুজো কমিটির মণ্ডপ তৈরির সময় একটি খেজুর গাছ গোড়া থেকে কেটে দেওয়া হয়। একটি কৃষ্ণচূড়া গাছের বেশ কয়েকটি ডালও কাটা হয়। অভিযোগ, মণ্ডপ আড়াল হবে, এই যুক্তিতে ওই ডাল কাটা হয়। এ নিয়ে এলাকাবাসীর অনেকেই ক্ষুব্ধ। কয়েক দিন আগে বিষয়টি নিয়ে পরিবেশ অ্যাকাডেমির তরফে চন্দননগরের মেয়রের কাছে লিখিত ভাবে অভিযোগ জানানো হয়। ছবি-সহ লিখিত অভিযোগ পাঠানো হয় চন্দননগরের এসিপি এবং ভদ্রেশ্বর থানার আইসি-র কাছেও।
পরিবেশ অ্যাকাডেমির সদস্যদের অভিযোগ, পরিবেশ সংক্রান্ত নিয়মকানুনের তোয়াক্কা না করে গাছ কাটা হয়েছে। আইন অনুযায়ী, বন দফতরের অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা যায় না। তাঁদের দাবি, এই কাজের জন্য ওই পুজো কমিটির কর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। রাজ্যের পুজো অনুদান ওই কমিটিকে না দেওয়া এবং পুজোর অনুমতি বাতিলের দাবিও জানানো হয়।
ওই সংগঠনের সভাপতি বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গাছ কাটা সংক্রান্ত নিয়মকানুন আজ কারও অজানা নয়। পুজো উদ্যোক্তাদের অনেক বেশি দায়িত্বশীল হওয়া উচিত। কিন্তু, তাঁরা উল্টো মানসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবশ্যই এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। ওই জায়গায় অন্তত ১০টি গাছ পুজো উদ্যোক্তাদের লাগানো উচিত।’’
পুজো কমিটির সভাপতি অর্জুন পালের দাবি, ‘‘খেজুর গাছের গোড়ার দিক পোকায় খেয়ে নিয়েছিল। তাই, গাছটি কাটা হয়েছে। কৃষ্ণচূড়া গাছটিও মণ্ডপের একেবারে সামনেয়। তাই, তার কয়েকটি ডাল কাটা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দফতরের অনুমতি না নেওয়াটা ঠিক হয়নি। তবে, গাছ কাটার বিনিময়ে গাছ লাগানোর নিয়ম আমরা জানি। পুজো মিটলেই লাগিয়ে দেব।’’