নোটিস মেলার পর মগরা-১ পঞ্চায়েতের দ্বারস্থ অনেকে। নিজস্ব চিত্র
রাজ্যের কয়েকটি এলাকার মতো হুগলির মগরাতেও পৌঁছে গেল আধার কার্ড নিষ্ক্রিয় হওয়ার চিঠি। ফলে, এ তল্লাটেও সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে।
গত দু’-তিন দিন ধরে মগরার বিভিন্ন এলাকায় ডাকঘর মারফত বেশ কয়েক জনের বাড়িতে ওই চিঠি পৌঁছেছে বলে খবর। ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি অব ইন্ডিয়া’র (ইউআইডিএআই) রাঁচি কার্যালয়ের ওই চিঠি পেয়েছেন, এমন জনা পনেরো মানুষ সোমাবার মগরা-১ পঞ্চায়েতে যান।
পঞ্চায়েত সূত্রের দাবি, মূলত তফসিলি জাতি এবং মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ ওই চিঠি পেয়েছেন। উপপ্রধান রঘুনাথ ভৌমিক বলেন, ‘‘মানুষজন ভয় পাচ্ছেন। আমরা তাঁদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছি। বিষয়টি প্রশাসনকে জানাব।’’ বিডিও (চুঁচুড়া-মগরা) রাজীব পোদ্দার বলেন, ‘‘খোঁজ নিচ্ছি।’’
মগরা-১ পঞ্চায়েতের মাঠপাড়ার বছর চুয়াল্লিশের প্রদীপ রায় শনিবার দুপুরে চিঠি পান। পেশায় চাষি প্রদীপের কথায়, ‘‘কেন এমন চিঠি এল, কে জানে! ব্যাঙ্ক, রান্নার গ্যাস, সবেতেই আধার নম্বর লিঙ্ক (সংযোগ) করা আছে।’’ একই বক্তব্য স্থানীয় অঞ্জলি মণ্ডলেরও। মগরার সুকান্তপল্লির বাসিন্দা, ফুচকা বিক্রেতা রবীন রায় জানান, তাঁর স্ত্রী মলিনা এবং ১৬ বছরের ছেলে লিখনের নামেও চিঠি এসেছে। রঘুনাথের বক্তব্য, ঠিক কত জনের কাছে ওই চিঠি এসেছে, স্পষ্ট নয়। পঞ্চায়েত সদস্যদের বলা হয়েছে, এলাকায় খোঁজ নিতে।
এ নিয়ে রাজনৈতিক চাপন-উতোরও শুরু হয়ে গিয়েছে। আধার নিষ্ক্রিয় হওয়ার চিঠি নিয়ে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এটা গরিব মানুষদের ‘অপমান’ বলেও মুখ্যমন্ত্রী মন্তব্য করেছেন। বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের দাবি, কারও আধার বাতিল হবে না। যাঁদের আধার সাময়িক ভাবে নিষ্ক্রিয় হয়েছে, রাতের মধ্যে ফের সক্রিয় হয়ে যাবে। সুকান্তের অভিযোগ, আধার কার্ড নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী সন্দেশখালির ঘটনা থেকে মানুষের দৃষ্টি ঘোরাতে চাইছেন।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এ দিন নিজের এক্স হ্যান্ডলে (পূর্বতন টুইটার) লেখেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁরা আশ্বস্ত করেছেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সব ঠিক হয়ে যাবে। বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রক
ও উচ্চপর্যায়ের আমলারা কিছু জানতেন না। রাঁচির আঞ্চলিক বিভাগ থেকে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে সেই বিষয়টি পুনর্বিবেচনার পর যাঁদের আধার কার্ড নিষ্ক্রিয়
হয়ে গিয়েছিল, তাঁদের আধার কার্ড পুনরায় চালু হবে।