মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
হাওড়ার মঙ্গলাহাটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ইতিমধ্যেই পাঁচ জনের একটি তদন্ত কমিটি গড়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার সেই কমিটির সঙ্গে আর একটি চার সদস্যের সাব-কমিটি তৈরি করল হাওড়া জেলা প্রশাসন। ওই সাব-কমিটিতে আছেন হাওড়া পুরসভার এক জন পদস্থ ইঞ্জিনিয়ার, দমকলের এক পদস্থ কর্তা, হাওড়া সিটি পুলিশের সহকারী নগরপাল(এসিপি) পদমর্যাদার এক জন অফিসার এবং জেলাশাসকের দফতরের বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগের এক আধিকারিক। পোড়া হাটের ধ্বংসস্তূপ সরানোরব্যাপারে এই সাব-কমিটি তদারকি করবে। তবে, কবে থেকে ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ শুরু হবে, তা স্পষ্ট হয়নি মঙ্গলবারেও। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, এ দিনই পোড়া হাটের সামনে এক সভায় এসে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমঅভিযোগ করেন, মঙ্গলাহাটে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। সিআইডি, ইডি বা সিবিআই নয়, এই ঘটনার তদন্ত আদালতের নজরদারিতে করার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
গত বৃহস্পতিবার মঙ্গলাহাটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পরথেকেই ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা দাবি জানিয়ে আসছেন, ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে পুজোর ব্যবসা শুরু করতে দেওয়ার জন্য। কিন্তু জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, যে হেতু এইঘটনায় অন্তর্ঘাতের অভিযোগ উঠেছে, সেই কারণে ফরেন্সিক পরীক্ষা এবং সিআইডি তদন্ত শেষ না হলেধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজে হাত দেওয়া যাবে না।
এ দিন জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, হাটের জমি সরকারি না ব্যক্তিগত, তা নিয়ে একটি প্রাথমিক রিপোর্ট তৈরি হয়েছে।পাশাপাশি, সিআইডি ও ফরেন্সিক পরীক্ষার রিপোর্ট জমা পড়েনি। তাই চূড়ান্ত রিপোর্ট তৈরি হতে আরও কিছু দিন সময় লাগবে। কারণ,প্রশাসন মনে করছে, এখনই পোড়া হাটের ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে ফেললে অনেক প্রমাণ নষ্ট হতে পারে। তাই সদ্য গঠিত সাব-কমিটির সদস্যেরা নিজেদের মধ্যে বৈঠকে বসে ঠিক করবেন, কবে থেকে এবং কী ভাবে এই ধ্বংসস্তূপ সরানো হবে। যদিও, সেই কাজ যে আগামীকয়েক দিনের মধ্যে হবে না, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে পুরসভার এক পদস্থ কর্তার কথাতেই।
ওই পুরকর্তা বলেন, ‘‘নতুন সাব-কমিটি প্রথমে নিজেদের মধ্যে বৈঠকে বসে কর্মপন্থা ঠিক করবে। এর পরে তাদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীরগড়ে দেওয়া পাঁচ সদস্যের কমিটির বৈঠক হবে। সামগ্রিক আলোচনার পরে ধ্বংসস্তূপ সরানো নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।’’
এ দিকে, এ দিন সকালে সিপিএমের তরফে হাওড়ার পোড়া হাটের সামনে মঞ্চ বেঁধে একটি প্রতিবাদ সভা করা হয়। সেখানে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সরাসরিঅভিযোগ করেন, ওই হাটে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁর আরও অভিযোগ, সিআইডি-কে সব জায়গায় রাখা হয় ফাইল লোপাটের জন্য। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাতেও মুখ্যমন্ত্রী সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়ে প্রমাণ আড়াল করার চেষ্টা করছেন। অন্য দিকে, ইডি বা সিবিআই-ও নিরপেক্ষ তদন্ত করে না। এ দিন সেলিমবলেন, ‘‘শুধু ব্যবসায়ীরা নন, পোড়া মঙ্গলাহাটে কাজের সঙ্গে যুক্ত সবাইকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবংতাঁদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।’’