সাংবাদিক বৈঠকে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি নিধি রানি। — নিজস্ব চিত্র।
ব্যাঙ্কের চেক জাল করে গ্রাহকদের লাখ লাখ টাকা লুট। হুগলিতে এমনই এক প্রতারণাচক্রের হদিশ পেল চন্দননগর পুলিশ। ওই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত আট জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ অভিযুক্তদের জেরা করছে। তদন্তকারীদের দাবি, একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের চুক্তিভিত্তিক এক কর্মী গ্রাহকদের তথ্য সরবরাহ করতেন। সেই তথ্যের মাধ্যমেই গ্রাহকদের চেক এবং সই নকল করে টাকা লোপাট করা হত বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে।
গত ১১ জুন ব্যান্ডেলের সাহাগঞ্জের বাসিন্দা সনৎকুমার মণ্ডল চন্দননগর পুলিশের সাইবার সেলে অভিযোগ দায়ের করেন, তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ৩ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে চেক ভাঙিয়ে। গত ২৪ মে প্রাথমিক ভাবে টাকা তোলার কথা সনৎ জানতে পারেন মোবাইলে মেসেজ পেয়ে। তিনি বেঙ্গালুরুতে চাকরি করেন। ব্যাঙ্কে গিয়ে তিনি আরও জানতে পারেন তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলা হয়েছে চেকের মাধ্যমে। কিন্তু যে চেক ভাঙিয়ে টাকা তোলা হয়েছে তা তার কাছেই রয়েছে। সনতের অভিযোগ পেয়ে প্রথমে সুরজ হোসেন নামে আমডাঙার এক যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে আরও সাত জনকে গ্রেফতার করে চন্দননগর পুলিশের গোয়েন্দারা। উদ্ধার হয়েছে খোয়া যাওয়া টাকাও।
তদন্তে দেখা যায় যে সুরজের অ্যাকাউন্টে চেকের টাকা ঢুকেছে। তাঁকে জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, চেক ছাপিয়ে বিভিন্ন লোকের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা সরিয়ে ফেলত ওই চক্রটি। ধৃতদের কাছ থেকে বহু ডেবিট কার্ড এবং ক্রেডিট কার্ড, প্রিন্টার, বিভিন্ন ব্যাঙ্কের চেক বই, ৯টি মোবাইল ফোন উদ্ধার হয়েছে। পাশাপাশি পাওয়া গিয়েছে ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের স্পেসিমেন সইও।
নৈহাটির একটি ব্যাঙ্ক থেকে চেকে টাকা তোলা হয়েছিল সেখানকার সিসি টিভি ফুটেজও সংগ্রহ করে পুলিশ। তদন্তকারীরা আরও জানতে পারেন, বারাসতের বাবান মজুমদার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের চুক্তিভিত্তিক কর্মী ছিলেন। সেখান থেকেই তিনি বহু গ্রাহকের তথ্য সরবরাহ করতেন বলেও জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।
(গুরুতর অপরাধে অভিযুক্তকে ‘আপনি’ সম্বোধনে আপত্তি প্রকাশ করেন কেউ কেউ। কিন্তু আইনের বিচারে দোষী সাব্যস্ত হননি, এমন অভিযুক্তকে ‘আপনি’ সম্বোধনেরই পক্ষপাতী আনন্দবাজার অনলাইন)