হাওড়ায় সিবিআইয়ের তদন্তকারী দল। —নিজস্ব চিত্র।
১০০ দিনের কাজে ‘দুর্নীতি’র তদন্তে ইডির ভুলের পুনরাবৃত্তি। আরজি করে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তে সিবিআইও একই ভুল করে বসল। রবিবার সকাল থেকে আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বাড়ি-সহ প্রায় ১৫টি জায়গায় অভিযান নেমেছে সিবিআই। সেই তালিকায় রয়েছেন হাওড়ার বিপ্লব সিংহ নামে এক ব্যক্তিও। সূত্রের দাবি, তাঁর একটি সংস্থা রয়েছে ‘তারা মা ট্রেডার্স’। কিন্তু সেই সংস্থার খোঁজ চালাতে চালাতেই ‘ভুল’ জায়গায় পৌঁছে যান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিসারেরা। রবিবার সকাল সকাল হাওড়া জেলারই বাসিন্দা মদন ঘোড়ুইয়ের বাড়ির দরজায় কড়া নাড়েন তদন্তকারী আধিকারিকেরা।
হাওড়ার এই মদনের একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যার নাম ‘মা তারা বিল্ডার্স’। আর সিবিআই খুঁজতে বেরিয়েছিল ‘মা তারা ট্রেডার্স’-এর মালিককে। দুই ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের প্রায় একই নাম হওয়াতেই সকাল সকাল সিবিআইয়ের দর্শন মেলে মদনের। তাঁর ব্যবসায়িক নথিপত্র দেখতে চান আধিকারিকেরা। প্রায় এক ঘণ্টারও কিছু বেশি সময় ধরে ওই ব্যক্তির ব্যবসা সংক্রান্ত নথিপত্র খতিয়ে দেখেন সিবিআই আধিকারিকেরা। উল্লেখ্য, সিবিআই যে বিপ্লব সিংহকে খুঁজতে বেরিয়েছিল, তিনি ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহের কাজ করেন। কিন্তু এই মদনের ব্যবসায়িক নথিপত্রের সঙ্গে চিকিৎসা সামগ্রী সংক্রান্ত কাজকর্মের কোনও যোগ ছিল না।
শেষে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকেরা বুঝতে পারেন, এই ব্যক্তিকে তাঁরা খুঁজছেন না। পরে সেখান থেকে চলে যায় সিবিআই। পরে ব্যবসায়ী পুত্র সৌমেন্দু ঘোড়ুই জানান, অযথা সেখানে পৌঁছে যাওয়ার জন্য তাঁর পরিবারের কাছে ক্ষমাও চান আধিকারিকেরা। তিনি বলেন, “তারা মা বিল্ডার্স সম্পর্কে তদন্তকারীদের মনে একটি ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল। আমি সংবাদমাধ্যম থেকে জানলাম, যে বিপ্লব সিংহের খোঁজ করছিলেন সিবিআই আধিকারিকেরা, তিনি তারা মা ট্রেডার্স চালান। তারা মা ট্রেডার্স এবং তারা মা বিল্ডার্স— এই দু’টি নাম নিয়েই তদন্তকারীরা বিভ্রান্ত হয়ে গিয়েছিলেন। সেই কারণেই তাঁরা এসেছিলেন এখানে। ব্যবসায়িক নথিপত্রও দেখলেন তাঁরা। পরে বিরক্ত করার জন্য আমাদের কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন।”
মা তারা বিল্ডার্সের মালিকের বাড়ি থেকে বেরিয়ে আবার বিপ্লব সিংহের খোঁজে রওনা দেন সিবিআই আধিকারিকেরা। পরে সেই আসল ব্যবসায়ীর ঠিকানাও খুঁজে পান তাঁরা। আপাতত বিপ্লব সিংহের বাড়িতেই রয়েছেন তদন্তকারী অফিসারেরা। আরজি করের আর্থিক অনিয়ম সংক্রান্ত মামলার তদন্তে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন তদন্তকারী আধিকারিকেরা।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতেও এই একই বিভ্রান্তিতে পড়েছিল অপর কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। একশো দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তে সন্দীপ সাধুখাঁ নামে হুগলির এক ব্যবসায়ীর খোঁজ চালাচ্ছিলেন ইডি আধিকারিকেরা। সেই খোঁজ করতে করতে একই নাম ও পদবির অপর এক সন্দীপ সাধুখাঁর বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছিল তদন্তকারী দল।