বাড়ছে সংক্রমণ। তবু দূরত্ব-িবধি মেনে চলা অথবা মাস্ক পরা— কোনও কিছুরই বালাই নেই মঙ্গলাহাটে। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
নতুন বছরের শুরুতেই হু হু করে সংক্রমণ বাড়তে থাকায় রাজ্য জুড়ে ফের কড়া বিধিনিষেধ চালু করেছে প্রশাসন। কিন্তু সোমবার বিধি উড়িয়েই কেনাকাটা চলল হাওড়ার মঙ্গলাহাটে। শারীরিক দূরত্ব-বিধি মেনে চলা তো নয়ই, মঙ্গলাহাটের ক্রেতা-বিক্রেতার অধিকাংশের মুখেই এ দিন মাস্কেরও বালাই ছিল না। পরিস্থিতি বিবেচনা করে তাই আগামী সপ্তাহ থেকে মঙ্গলাহাট বন্ধ করা হবে কি না, তা ঠিক করতে বৈঠকে বসবে জেলা প্রশাসন ও পুরসভা।
হাওড়া শহরে মারাত্মক ভাবে সংক্রমণ বাড়লেও মঙ্গলাহাটে এ দিনও কোভিড-বিধি মেনে চলার মতো সচেতনতা দেখা যায়নি। অথচ এই হাটকে ঘিরেই রয়েছে হাওড়া জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন অফিস, হাওড়া হাসপাতাল, হাওড়া পুরসভা, জেলাশাসক এবং পুলিশ কমিশনারের দফতর। কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়ে এই এলাকাটি কন্টেনমেন্ট জ়োন হিসাবে চিহ্নিত করে ঘিরে রাখা হয়েছিল। যে হেতু বিভিন্ন রাজ্য থেকে এই হাটে ক্রেতা-বিক্রেতারা আসেন, তাই কেন ঝুঁকি নিয়ে এখনও হাট খুলে রাখা হয়েছে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
মঙ্গলাহাটে ১১টি বাড়িতে হাট বসে। প্রায় ৬০ থেকে ৭০ হাজার ব্যবসায়ী এই হাটে ব্যবসা করে থাকেন। এ ছাড়া, ফুটপাতে জামাকাপড়ের পসরা নিয়ে বসেন আরও প্রায় ২০-২৫ হাজার বিক্রেতা। হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, মেদিনীপুরে মতো জেলা, এমনকি ভিন্ রাজ্য থেকেও ব্যবসায়ীরা এই হাটে আসেন। ফলে সপ্তাহে দু’দিন এখানে লক্ষাধিক মানুষের
সমাগম হয়।
২০২০ ও ২০২১ সালে সংক্রমণের প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউ চলার সময়ে একাধিক বার দফায় দফায় মঙ্গলাহাট বন্ধ হয়েছিল। পরবর্তী কালে গত বছর জুলাইয়ে করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার পরে খুলে দেওয়া হয়েছিল হাট।
মঙ্গলাহাট সমম্বয় ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সম্পাদক কানাই পোদ্দার এ দিন বলেন, ‘‘আমরা হাটের ভিতরে মাস্ক পরা, স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করা ও দূরত্ব-বিধি বজায় রাখার মতো বিষয়ে প্রচার চালাব। তবে হাট বন্ধ করা হবে কি না, তা নিয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে এখনও বৈঠক হয়নি।’’ পশ্চিমবঙ্গ বস্ত্রশিল্প ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক পরিমল রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘জেলা প্রশাসন যে সিদ্ধান্ত নেবে, তা আমাদের মানতেই হবে।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই সরকারি ভাবে মঙ্গলাহাট বন্ধের ব্যাপারে পুরসভার সঙ্গে বৈঠক হবে। হাট কবে থেকে বন্ধ করা হবে, তা নিয়ে সেখানেই সিদ্ধান্ত হবে।