Accident

accident: গতি বাড়াতে গিয়ে বাস পিষে দিল বাইকচালককে

বাসস্টপ থেকে যাত্রী তুলে আচমকাই তাড়াহুড়ো করে গতি বাড়িয়ে সেতুতে উঠতে গিয়ে এক মোটরবাইক চালককে পিষে দিল একটি বেসরকারি বাস।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হাওড়া শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২১ ০৬:৫২
Share:

মর্মান্তিক: সৌমেনবাবুর মোটরবাইক। মঙ্গলবার, কাজীপাড়া বাসস্টপের কাছে। নিজস্ব চিত্র।

কলকাতার দিকের বাস ধরার জন্য সেতুর রেলিং ভেঙে তৈরি করা হয়েছিল বাসস্টপ। সেই বাসস্টপ থেকে যাত্রী তুলে আচমকাই তাড়াহুড়ো করে গতি বাড়িয়ে সেতুতে উঠতে গিয়ে এক মোটরবাইক চালককে পিষে দিল একটি বেসরকারি বাস। গুরুতর আহত হলেন বাইকের পিছনের আসনে বসা আরোহী। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার দিকে বিদ্যাসাগর সেতুতে। দুর্ঘটনার পরে মৃতদেহটি দীর্ঘক্ষণ বাসের চাকার নীচে পড়ে থাকার পরেও পুলিশ এসে উদ্ধার না করায় এলাকার বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের অভিযোগ, আহত ব্যক্তিকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে গেলেও প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে মৃতের দেহটি পড়ে থাকে। পরে একটি ছোট মালবাহী গাড়িতে করে দেহ তুলে নিয়ে যায় পুলিশ।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন সকালে স্ত্রীকে মোটরবাইকে বসিয়ে সাঁতরাগাছির ব্যাঙ্কে ছেড়ে আসার পরে বাড়ি ফিরে খাওয়াদাওয়া করে অফিস যাওয়ার জন্য রওনা হয়েছিলেন হাওড়ার রামরাজাতলার বাসিন্দা সৌমেন হুতাইত (৬৫)। কিন্তু অফিস পৌঁছনোর আগেই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল তাঁর। বাইকে তাঁর পিছনে বসে থাকা আরোহী তপন বসু সৌমেনবাবুর আত্মীয়। তিনি গুরুতর ভাবে আহত হয়ে বর্তমানে এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের থেকে জানা গিয়েছে, প্রতিদিনের মতো এ দিনও বিদ্যাসাগর সেতুর টোল প্লাজ়া থেকে কিছুটা দূরে, সেতুর উপরে তৈরি কাজীপাড়া বাসস্টপে অনেক যাত্রী অপেক্ষা করছিলেন। মহম্মদ আশরফ নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘‘নিউ টাউন-সাঁতরাগাছি রুটের একটি বেসরকারি বাস যাত্রী তোলার পরেই আচমকা গতি বাড়িয়ে দেয়। আর তার পরেই সামনে থাকা একটি মোটরবাইকে সজোরে ধাক্কা মারে। তখন দেখি, যে ব্যক্তি মোটরবাইক চালাচ্ছিলেন, তাঁকে পিষে দিয়ে বাসটি দাঁড়িয়ে পড়েছে। বাইকের পিছনে বসা আরোহী রাস্তার উপরে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছেন।’’

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, বাসের চাকায় সৌমেনবাবুর দেহ জড়িয়ে গিয়েছিল। ঘটনাস্থল থেকেই বাসচালক পালিয়ে যায়। পরে হাওড়ার মন্দিরতলা আউটপোস্টের এক সার্জেন্ট খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে একটি অ্যাম্বুল্যান্স পাঠিয়ে প্রথমে আহত ব্যক্তিকে এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। অভিযোগ, অনেক ক্ষণ পরেও অ্যাম্বুল্যান্স না মেলায় পুলিশ একটি তিন চাকার মালবাহী গাড়িতে করে সৌমেনবাবুর দেহ এসএসকেএমে নিয়ে যায়।

স্থানীয় সূত্রের খবর, সৌমেনবাবু ভবানীপুরের একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী ছিলেন। তিনি পেশায় শিল্পী। এ দিন পুলিশের কাছে খবর পেয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে আসেন সৌমেনবাবুর স্ত্রী রূপা দাস ও দুই মেয়ে। হাসপাতালে স্বামীর মৃত্যুর খবর পেয়ে জ্ঞান হারান রূপাদেবী। পরে তিনি বলেন, ‘‘সকালেই আমাকে মোটরবাইকে চাপিয়ে ব্যাঙ্কে দিয়ে এল। সকাল থেকে বাড়ির কত কাজ করল। অফিসে যাওয়ার জন্য তাড়াহুড়ো করছিল। এই ভাবে আমাদের ছেড়ে চলে যাবে, কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না।’’ বাবাকে হারিয়ে দুই মেয়েও হাসপাতাল চত্বরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। সৌমেনবাবুর বড় মেয়ে সুরঞ্জিতা দাস বলেন, ‘‘আহত তপনকাকা বাবার অফিসেই কাজ করেন। প্রত্যেকদিন বাবার সঙ্গে মোটরবাইকে চেপে অফিসে যেতেন। এমন কিছু যে হয়ে যাবে, ভাবতে পারিনি।’’ হেস্টিংস থানার পুলিশ বাসটিকে আটক করেছে। পলাতক চালকের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলে লালবাজারের এক আধিকারিক জানিয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement