দাদাকে সুপারি কিলার দিয়ে খুনের অভিযোগ। প্রতীকী ছবি।
সম্পত্তির লোভে দাদাকে সুপারি কিলার দিয়ে খুন করানোর অভিযোগ উঠল ভাইয়ের বিরুদ্ধে। এই ঘটনা হুগলির শ্রীরামপুরের রাজ্যধরপুর এলাকার। পুলিশ ওই ঘটনায় নিহতের ভাই-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে।
গত বৃহস্পতিবার রাজ্যধরপুরের দাসপাড়া এলাকার বাসিন্দা গৌতম দাসের (৫৮) মৃতদেহ উদ্ধার হয় এলাকারই একটি পুকুর থেকে। স্থানীয়রা গৌতমের মৃতদেহ পুকুরে ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দেন। পরে পিয়ারপুর ফাঁড়ির পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে পাঠায় ময়নাতদন্তের জন্য। দাদার মৃত্যু নিয়ে শ্রীরামপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন গৌতমের ছোট ভাই উৎপল দাস। পুলিশি তদন্তে ফাঁস হয়ে যায় গৌতম খুনের চক্রান্ত।
জানা গিয়েছে, গৌতমরা পাঁচ ভাই এবং এক বোন। এর মধ্যে এক ভাইয়ের মৃত্যু হয় বছর দুয়েক আগে। বাকি ভাইদের মধ্যে একমাত্র উজ্জ্বল দাস বিবাহিত। সে পরিবার নিয়ে আলাদা বাড়িতে থাকে। বাকি তিন ভাই, বোন এবং ভগ্নিপতি একসঙ্গে থাকেন। তিন অবিবাহিত ভাইয়ের মধ্যে পঙ্কজ আবার মানসিক ভাবে অসুস্থ। দিল্লি রোডের পাশে দাস পরিবারের বিপুল টাকার জমি এবং সম্পত্তি রয়েছে। পুলিশের দাবি, সেই সম্পত্তি দখল করার লোভে দাদাকে খুনের ছক করে ভাই উজ্জ্বল।
ওই কাণ্ডে পুলিশ কৃষ্ণ সরকার নামে এক যুবককে গ্রেফতার করে। মাঠপাড়ার বাসিন্দা বছর তিরিশের কৃষ্ণ পুলিশের নজরে ছিল তার অসামাজিক কাজের জন্য। শুক্রবার রাতে বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কৃষ্ণকে জেরা করে ওই রাতেই নিজের বাড়ি থেকে আটক করা হয় উজ্জ্বলকে। এর পর দু’জনকে জেরা করে খুনের কারণ জানা যায় বলে পুলিশের দাবি। পুলিশ জানিয়েছে, উজ্জ্বল স্বীকার করেছেন সম্পত্তির লোভে তিনিই কৃষ্ণকে খুনের জন্য সুপারি দেন। জানা গিয়েছে, ২৫ হাজার টাকায় রফা হয়। কৃষ্ণকে অগ্রিম পাঁচ হাজার টাকাও দেন উজ্জ্বল। বুধবার রাত ১২টা নাগাদ গৌতমকে গলা টিপে খুন করে পুকুরে ফেলে দেওয়া হয় বলে পুলিশের দাবি। পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, এর আগে দু’বার উজ্জ্বল তার ভাইদের না জানিয়ে জমি বিক্রি করে টাকা হাতিয়ে নিয়েছিলেন। তা নিয়ে অশান্তিও লেগে ছিল পরিবারে। এর পর দাদাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিলে সুবিধা হবে মনে করে খুনের ছক কষেন উজ্জ্বল। এই পরিকল্পনায় উজ্জ্বলের ভগ্নিপতি বিজয় মণ্ডলও শামিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। তার খোঁজেও তল্লাশিও চলছে।