সুতলির এই বলকে ঘিরেই বোমাতঙ্ক চুঁচুড়ায়। — নিজস্ব চিত্র।
ইদানীং বোমা উদ্ধারের খবর নিত্যই শোনা যায়। ইতিউতি বলের আকৃতির জিনিস নিয়ে খেলতে গিয়ে বিস্ফোরণের ঘটনাও আকছার শোনা যাচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে সুতলি পাকানো গোলাকার বস্তুকে দেখে বোমা ভেবেছিলেন সাধারণ মানুষ। ঘটনাস্থল, হুগলির চুঁচুড়া। পরে দেখা যায়, বোমা নয়, স্রেফ চটের সুতলি পড়ে রয়েছে। ভয় ভাঙে জনতার।
চুঁচুড়ার গোয়ালটুলি এলাকায় বাড়ি সুমতি সানার। মঙ্গলবার সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়েছিলেন তিনি। সেই সময় সুমতির নজরে পড়ে বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্কের পাশে পড়ে রয়েছে একটু লম্বাটে ধরনের গোলাকার সুতলির বল। দেখে প্রথমে কিছুই বুঝতে পারেননি সুমতি। পরে আরও কয়েক জনের সঙ্গে কথা বলে বুঝতে পারেন, বোমা হতে পারে। এলাকায় বোমাতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশের খবর দেন সুমতি। পুলিশ এসে দেখে, বাড়ির ট্যাঙ্কের পাশে পড়ে রয়েছে একটি সুতলির বল। তা বোমা হতে পারে।
সুমতি বলেন, ‘‘সকালে হাঁটতে বেরিয়ে দেখি ট্যাঙ্কের পাশে বলের মতো সুতোর বল পড়ে আছে। কথা বলে বুঝতে পারি, এটা বোমা হতে পারে। তখন পুলিশে খবর দিই। এখানে বাচ্চারা খেলাধুলো করে। সেই জন্যই আমরা আরও ভয় পেয়ে গিয়েছি। বোমা কে রাখল কিছুই বুঝতে পারছি না। বাইরে থেকে অনেক লোকজন আসে এলাকায়। খুবই চিন্তায় আছি।’’
স্থানীয় সূত্রে খবর, গোয়ালটুলি এলাকায় বহিরাগতদের আনাগোনা রয়েছে। তারাই বোমা মজুত করছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ অকুস্থল ঘিরে রেখেছে। পরে অবশ্য পুলিশের তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, সুতলির বলের ভিতরে বারুদ নেই। চন্দননগর পুলিশের ডিসিপি ঈশানী পাল বলেন, ‘‘সুতলি পাকানো ওই বস্তুটি উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে দেখা গেছে, তার ভিতরে বারুদ নেই। কী কারনে ওখানে ফেলে রাখা হল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
এ দিকে চুঁচুড়ারই কাপাসডাঙায় সাতসকালে একটি দাবিদারহীন পার্সেলকে ঘিরে বোমাতঙ্ক ছড়ায়। ২ নম্বর কাপাসডাঙার বাসিন্দা গৌতম বণিক। মঙ্গলবার সকালে তাঁর বাড়িতে কাজ করতে আসছিলেন পরিচারিকা। তিনি প্রথম পার্সেলটি দেখতে পান। কিন্তু কোনও দাবিদার না পাওয়া যাওয়ায় পুলিশে খবর দেন গৌতম। চুঁচুড়া থানার পুলিশ গিয়ে পার্সেলটি উদ্ধার করে নিয়ে যায়। পুলিশ সূত্রে খবর, পার্সেলে কিছু ছিল না।
পঞ্চায়েত ভোটের পরে চুঁচুড়া আনন্দমঠ এলাকার একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে একই রকম সুতলি পাকানো বেশ কয়েকটি গোলাকার বস্তু উদ্ধার হয়েছিল। তারও আগে কোদালিয়ার নলডাঙা নারায়নপুর প্রাইমারি স্কুলের মাঠে বোমা উদ্ধার হয়েছিল। স্বভাবতই, সাতসকালে সুতলির বল পড়ে থাকতে দেখে আতঙ্কিত এলাকাবাসী।