পুরসভার বাইরে বিক্ষোভ চলছে। নিজস্ব চিত্র
হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের পুর প্রতিনিধি (কাউন্সিলর) সরস্বতী পালের বিরুদ্ধে পুর-নিয়োগে স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলেছিলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। সরস্বতীর পদত্যাগের দাবিতে বুধবার পুরসভায় বিক্ষোভ দেখালেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা।
বুধবারই সুকান্তের অভিযোগ সরস্বতী কার্যত মেনে নিয়ে দাবি করেছিলেন, অস্থায়ী ওই নিয়োগে তিনি অনৈতিক কিছু দেখছেন না। বৃহস্পতিবারের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে সরস্বতী বলেন, ‘‘যা বলার দলকে বলব।’’ পুরপ্রধান অমিত রায় বলেন, ‘‘দিল্লিতে ‘মোদী হটাও’ পোস্টার পড়তেই পুলিশ দিয়ে সাধারণ মানুষকে গ্রেফতার করাচ্ছে বিজেপি। এখানে এখনও গণতন্ত্র আছে বলে ওঁরা (বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা) চিৎকার করতে পারছেন।’’ স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদার বলেন, ‘‘বিজেপির রাজ্য সভাপতি না জেনে মন্তব্য করেছেন। ওটা ঠিক চাকরি নয়। সামান্য দিনমজুর হিসাবে বেকারদের জন্য পুরসভা কাজের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। তাঁদের মজুরি পুরসভাই দেয়।’’
এ দিন সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ বিজেপির হুগলি মণ্ডল সভাপতি রাকেশ যাদবের নেতৃত্বে জনাপঞ্চাশ বিজেপি কর্মী-সমর্থক মিছিল করে পুরসভার গেটের সামনে আসেন। গেট বন্ধ করে সরস্বতীর পদত্যাগের দাবি তোলেন তাঁরা। আধ ঘণ্টা পরে তাঁরা পুরসভায় ঢুকলে পুলিশ বাধা দেয়। বিক্ষোভকারীরা দফতর থেকে বেরিয়ে আসেন। কিছুক্ষণ পর পুরপ্রধান যেতেই তাঁর সামনে বিক্ষোভ হয়। দু’পক্ষের বাদানুবাদ হয়। পুলিশ কোনওক্রমে অমিতকে ভিতরে ঢুকিয়ে দেন।পরে বিজেপির এক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে পুরপ্রধান কথা বললে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
রাকেশ বলেন, ‘‘স্থায়ী হোক কিংবা অস্থায়ী— সর্বত্র নিয়োগে অনিয়ম করেছে তৃণমূল। আমরা চাই সত্যিকারের বেকার যুবক-যুবতীরা কাজ পান।’’ সরস্বতীর আগে ওই ওয়ার্ডের দু’দফার পুর প্রতিনিধি ছিলেন তাঁর স্বামী সঞ্জয়। তাঁর বিরুদ্ধে সেই সময়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তাঁর সম্পত্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপির জেলা নেতা সুরেশ সাউ। তিনি বলেন, ‘‘২০১০ এর আগে একজন সাধারণ আনাজ ব্যবসায়ী ছিলেন সঞ্জয়। এখন তাঁর বিশাল প্রতিপত্তি। তাঁর একাধিক বাড়ি রয়েছে। নানা দুর্নীতিতে যুক্ত থেকে এত সম্পত্তি হাঁকিয়েছেন।’’
সঞ্জয় ভারতীয় জীবনবিমা সংস্থার এজেন্ট। বিজেপির তোলা অভিযোগ অস্বীকার করে সঞ্জয়ের দাবি, ‘‘আমি উচ্চ স্তরের এলআইসি এজেন্ট। আমার ঝুটো গয়না এবং ও রেডিমেড জামাকাপড়ের ব্যবসাও রয়েছে। আমি কাউকে বিমা করতে বাধ্যকরিনি। বাড়ি করেছি ঋণ নিয়ে। বিজেপির কোনও কাজ নেই। অযথা অভিযোগ করছে।’’