তৃণমূল নেতা তন্ময় দেবের জামিন করানোয় শোকজ বিজেপি নেতা রঘুনাথ অধিকারী। নিজস্ব চিত্র।
বিজেপি নেত্রীকে মেরে পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাকে জামিন করানোয় শোকজ করা হল কলকাতা হাই কোর্টের আইনজীবী তথা বিজেপি-র শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি রঘুনাথ অধিকারীকে।
পুরসভা ভোটের আগের দিন রাতে দলীয় অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথে আক্রান্ত হন কৃষ্ণা ভট্টাচার্য। বিজেপি-র প্রাক্তন জেলা সভাপতি কৃষ্ণা কোন্নগর পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী ছিলেন। ১০ নম্বর ওয়ার্ডেই তৃণমূলের প্রার্থী ছিলেন তন্ময় দেব। তন্ময় বিদায়ী পুরবোর্ডের প্রশাসক ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে বিজেপি নেত্রীকে বেধরক মারধর করার। ঘটনায় কৃষ্ণা ভট্টাচার্য গুরুতর জখম হন। তার পা ভেঙে যায়। তাঁকে ভর্তি করানো হয় হিন্দমোটরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে।
ঘটনার পর বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দেখতে আসেন কৃষ্ণাকে। পুলিশকে নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করতে বলেন। উত্তরপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয় তন্ময়ের বিরুদ্ধে। কৃষ্ণাকে পরে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয় উন্নত চিকিৎসার জন্য।
থেকে তৃণমূল নেতার আগাম জামিন করান রঘুনাথ। তিনি কেন তৃনমূল নেতার জামিন করালেন? সেটা জানতে বিজেপি তাঁকে শোকজ করেছে। রঘুনাথ সেই শোকজের জবাব দিয়েছেন বলে জানান। সোমবার তিনি বলেন, ‘‘এক জন আইনজীবী এক জন ডাক্তারের মতই। ডাক্তার যেমন রোগী কোন দলের সমর্থক তা দেখে চিকিৎসা করেন না। আইনজীবীও তেমনই। তাঁর দুটি সত্তা। একটি রাজনৈতিক, আরেকটি পেশাগত।’’ দল যদি তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয় তা হলে কিছু করার নেই বলেও জানান রঘুনাথ।
তন্ময় জানান, তাঁর পাশের ওয়ার্ডে কৃষ্ণা আক্রান্ত হয়েছিলেন। তবুই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। মঙ্গলবার কোন্নগর পুরসভার শপথগ্রহণ কাউন্সিলরদের।তিনিও এক জন কাউন্সিলর তাই শপথ নেওয়ার আগে আগাম জামিন নিয়েছেন। তার হয়ে বিজেপি-র আইনজীবী-নেতার আদালতে সওয়ালেও কোনও দোষ দেখছেন না তিনি। তন্ময় বলেন, ‘‘ডাক্তার উকিলের কোনও দল হয় না। তবুও বিজেপি তাঁর (রঘুনাথ) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে, এটা বিজেপি-র সংস্কৃতি।’’
তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছিল। তন্ময়ের জামিনে তা প্রমাণিত হয়েছে। রঘুনাথবাবু একজন আইনজীবী। তিনি তাঁর পেশাগত বাধ্যবাধকতা থেকে কাজ করেছেন।’’