সুবীর নাগকে সংবর্ধনা তৃণমূল সাংসদ পোদ্দারের। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূল সাংসদ এবং বিধায়কের হাত থেকে সংবর্ধনা নিচ্ছেন বিজেপি-র প্রাক্তন জেলা সভাপতি। শনিবার এমনই দৃশ্য দেখা গেল হুগলির চুঁচুড়ায়। যদিও ওই বিজেপি নেতার সাফাই, নিজের ক্লাবের অনুষ্ঠানে মঞ্চে তিনি উপস্থিত ছিলেন। বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে হুগলির বিজেপি নেতৃত্বের পাল্টা হুঙ্কার, ‘উচ্চনেতৃত্ব সব দেখছেন।’
শনিবার চুঁচুড়ার একটি অনুষ্ঠানে এক মঞ্চে দেখা যায় আরামবাগের তৃণমূল সাংসদ অপরূপা পোদ্দার, চুঁচুড়ার তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদার এবং বিজেপি-র হুগলি জেলার প্রাক্তন সভাপতি সুবীর নাগকে। অপরূপার হাত থেকে সংবর্ধনাও নেন সুবীর। আর তা নিয়েই দানা বেঁধেছে বিতর্ক।
যদিও সুবীরের কথায়, ‘‘তৃণমূলের মঞ্চে আমি সংবর্ধনা নিতে গিয়েছি, এটা সর্বৈব মিথ্যে কথা। আমার পাড়ার যে ক্লাবের আমি দীর্ঘ দিন সদস্য সেখানে আজ গুণীজন সংবর্ধনা ছিল। অপরূপা পোদ্দার আমাদের ক্লাবকে একটি শববাহী গাড়ি দান করেছেন। তার উদ্বোধন ছিল আজ। বিধায়কও এই পাড়ার ছেলে। এক জন সাংসদ জনগণের প্রতিনিধি। তিনি আমাকে সংবর্ধনা দিচ্ছেন আমি কি তা প্রত্যাখ্যান করব? এই ঘটনাটিকে অতিরঞ্জিত করা হচ্ছে।’’
সুবীরের কথায়, ‘‘আমি দলে কোনও বিদ্রোহ করিনি। কারা ভোটে দাঁড়াবেন তা যখন স্থির হয় তখন আমি আমার প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলাম। মানুষ বিজেপি-কে নয়, যাঁরা প্রতিন্দ্বিতা করেছিলেন তাঁদের প্রত্যাখ্যান করেছেন।’’
সুবীরের এই ঘটনায় কিছুটা অস্বস্তিতে হুগলির বিজেপি শিবির। দলের হুগলি জেলার যুব নেতা সুরেশ সাউয়ের কথায়, ‘‘বিজেপি একমাত্র দল যেখানে গণতন্ত্র এবং স্বাধীনতা আছে। কেউ সে সবের অপব্যবহার করে থাকলে তার শাস্তিও আছে। কারও কিছু করার ব্যক্তি স্বাধীনতা থাকতেই পারে। তবে দলের উচ্চনেতৃত্ব তা দেখছে। তার ব্যবস্থা নেবে।’’
সুবীরের স্পষ্ট কথা, ‘‘চাদর চাপা দিলে রোগ সারে না, জয়প্রকাশ’দার এই কথাটা আমিও মানি। দল আমাকে কাজ করার সুযোগ দিলে আমি তা করব।’’ দলবদলের সম্ভাবনা নিয়ে সুবীরের ব্যাখ্যা, ‘‘যদি কোনও আহ্বান আসে তা হলে তা ভেবে দেখব।’’
সুবীরের পাশে দাঁড়িয়ে তৃণমূলের অসিতের বক্তব্য, ‘‘চুঁচুড়া পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের একটি ক্লাবের তরফে কয়েক জনকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে আজ। তার মধ্যে সুবীর নাগও ছিলেন। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। তৃণমূল থেকে ওঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়নি। সুবীর বিজেপি-র দুঃসময়ে ছিলেন। তিনি তৃণমূলে যোগ দেবেন কি না তা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে তিনি তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলে দল চিন্তাভাবনা করবে। আমাদের তাঁকে নিয়ে চলতে কোনও অসুবিধা নেই।’’