পাঁচলার বাগানে ঘরছাড়া বিজেপি এবং সিপিএম কর্মীরা। — নিজস্ব চিত্র।
ভোট পরবর্তী হিংসার কারণে বাড়িঘর ছেড়ে জঙ্গলঘেরা বাগানে আশ্রয় নিতে হয়েছে বিজেপি এবং সিপিএম কর্মীদের। হাওড়ার পাঁচলায় তেমনটাই অভিযোগ বিরোধীদের। অভিযোগ, তৃণমূল কর্মীরা পঞ্চায়েত ভোটের পর থেকেই এলাকায় ‘সন্ত্রাস’ চালাচ্ছেন। বিরোধী কর্মীদের মারধর করা হয়েছে। এমনকি, পুলিশও বিরোধীদের খুঁজছে। সেই কারণে বাধ্য হয়ে তাঁদের কয়েক জন বিজেপি এবং সিপিএম কর্মী বাগানে আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁরা বাড়ি ফিরতে পারছেন না। বাগানেই দিন কাটাচ্ছেন। রাতে কেউ কেউ আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিচ্ছেন।
ভোটের পর পাঁচলার গঙ্গাধরপুর এলাকায় একাধিক বিজেপি এবং সিপিএম কর্মী ঘরছাড়া হয়েছেন বলে অভিযোগ। শেখ আরিফ হোসেন নামে এক যুবক জানান, পঞ্চায়েত ভোটের সময় তিনি সিপিএম প্রার্থীর হয়ে কাজ করেছিলেন। সেই কারণেই তাঁর কারখানা এবং বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। আতঙ্কে তিনি বাড়ি ফিরতে পারছেন না। অভিযোগের তির তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের দিকে। একই সঙ্গে যুবকের অভিযোগ, তাঁকে ধরতে বাড়িতে পুলিশ আসছে। গ্রেফতারি এড়াতে বাগানে দিন কাটাতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ওই যুবক।
এলাকার বিজেপি কর্মী অজয় কোলে জানিয়েছেন, তিনি ভোটের সময় দলের প্রার্থীর এজেন্ট হিসাবে কাজ করেছেন। গণনার দিন তাঁকে মারধর করা হয়েছে। বাড়িতে বার বার তাঁকে খুঁজতে পুলিশ আসছে বলে অভিযোগ। সেই কারণেই বাগানে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। ভোটের হিংসায় তাঁরাই আক্রান্ত, আবার তাঁদেরই কেন পুলিশ ধরতে চায়? প্রশ্ন তুলেছেন অজয়।
তবে বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে শাসকদল। এলাকার তৃণমূল নেতা শেখ নাসিমের পাল্টা অভিযোগ, বিরোধীরা তাঁদের কর্মী, সমর্থকদের ঘর ভাঙচুর করেছে। তাই পুলিশ তাঁদের খুঁজছে। তৃণমূল সবসময় শান্তি বজায় রাখার চেষ্টা করে বলেও দাবি করেছেন তিনি।
এ দিকে, ভোট পরবর্তী পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে সোমবারই পাঁচলায় গিয়েছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। তিনি দলীয় কর্মী এবং সমর্থকদের সঙ্গে দেখা করেছেন। তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘‘এখানে হিংসার রাজনীতি চলছে।’’ ঘরছাড়াদের ঘরে ফেরানোর আশ্বাসও দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা।
শুভেন্দু পাঁচলার বিডিও অফিসে গিয়েও অভিনব কায়দায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন। বিডিওকে না পেয়ে অফিসের এক আধিকারিকের হাতে তিনি তুলে দেন কালো গোলাপ এবং মিষ্টি। ব্যঙ্গাত্মক সুরে বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের সব বিডিওকেই মিষ্টি আর ফুল দেওয়া উচিত। কারণ ওঁরা পঞ্চায়েতে খুব সুন্দর করে গণনা করেছেন এবং ভোট লুট করে মমতাকে উপহার দিয়েছেন।’’