গ্রাফিক— সনৎ সিংহ।
পঞ্চায়েত ভোটের গণনা শেষ হলেও হিংসা থামছে না রাজ্যে। এ বার হুগলিতে দুই রাজনৈতিক দলের সমর্থকদের মধ্যে অশান্তির অভিযোগ উঠল। একদলের প্রার্থী, বুথ সভাপতি, সমর্থকদের বাড়িতে ঢুকে সশস্ত্র হামলার অভিযোগ উঠল অন্য দলের সমর্থকদের বিরুদ্ধে। টাঙ্গি দিয়ে কোপানো হল। ভাঙচুর করা হল বাড়ি। ঘটনায় গুরুতর আহত এক প্রৌঢ়কে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসতে হল কলকাতার হাসপাতালে।
বুধবার রাতে হুগলির জাঙ্গিপাড়ায় এই ঘটনা ঘটেছে। যে খানে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ করেছে বিজেপি। তাঁদের অভিযোগ, রাতে রাজবলহাট-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের রহিমপুর কুমোরপড়ায় বাঁশের লাঠি, শাবল, টাঙ্গির মতো অস্ত্র নিয়ে ওই এলাকার বিজেপি নেতা এবং সমর্থকদের বাড়িতে চড়াও হন তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। এলাকায় বিজেপি বুথ সভাপতি নব পাল এবং এ বারের পঞ্চায়েত ভোটের ২৯ নং বুথের প্রার্থী সৌরেন পালের বাড়ি-সহ অন্তত দশটি বাড়িতে ঢুকে হামলা চালায় তারা। বাড়ি ভাঙচুর করার পাশাপাশি মারধরও করা হয়। হয় বোমাবাজিও।
স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, ওই ঘটনায় তারক পাল নামে এক প্রৌঢ়ের মাথা টাঙ্গি দিয়ে কোপানো হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে প্রথমে জাঙ্গিপাড়া হাসপাতাল পরে কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়। আঘাতে প্রায় ফালা ফালা হয়ে যায় তাঁর মাথার খুলি। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থলে যান শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা বিজেপি সভাপতি মোহন আদকও। তিনি এই ঘটনার জন্য তৃণমূলকেই দোষারোপ করেছেন।
পঞ্চায়েত ভোটে এ বার হুগলিতে হালে পানি পায়নি বিজেপি। মোট ৩৮৮০টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসনের মধ্যে ৩০২৫টিতেই জয়ী হয়েছে তৃণমূল। পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদেরও ফল একই। বিরোধীদের অভিযোগ সেই হুগলিতেই ভোট গণনার পর থেকে বেশ কিছু এলাকাতে মারধর, ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। নবাবপুর, ভগবতীপুর এলাকা থেকে অশান্তির খবর এসেছে। আর সব ক্ষেত্রেই শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে বিরোধীরা। যদিও তৃণমূল এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। হুগলির শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি অরিন্দম গুঁইন বলেন,শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে। তৃণমূল জিতেছে তাই তাদের সন্ত্রাস করার প্রয়োজন পড়ে না। এই হিংসা আদতে রাম-বামের। যে বাম ছিল সে রাম হয়েছে তাই নিজেদের মধ্যেই এই গন্ডগোল।’’
এলাকায় অশান্তির কথা কিছু না বললেও হুগলি জেলা গ্রামীণ পুলিশ সুপার আমনদীপ জানিয়েছেন, এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশি টহল চলছে। সমস্ত অভিযোগের ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।