তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেলপথ নির্মাণে এক সমস্যা মিটল
Tarakeshwar Bishnupur Railway

জমির ‘ন্যায্য দাম’ মিলবে, নোটিস পশ্চিম অমরপুরে

পশ্চিম অমরপুরের আন্দোলন কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১০ সাল থেকে জমির ন্যায্য মূল্য এবং নিকাশি ব্যবস্থার দাবিতে তাঁদের আন্দোলন চলছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গোঘাট শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:২৫
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

তারকেশ্বর থেকে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের ক্ষেত্রে গোঘাটের ভাবাদিঘির জট এখনও কাটেনি। তবে, পশ্চিম অমরপুরে জমির দাম সংক্রান্ত সমস্যা মিটল। ভূমি দফতর কাঠাপিছু ৯২ হাজার টাকা ধার্য করে বৃহস্পতিবার থেকে চাষিদের শুনানির নোটিস পাঠানো শুরু করেছে।

Advertisement

আন্দোলনকারী চাষিদের সংগঠন ‘রেল চালাও, গ্রাম বাঁচাও’ কমিটির তরফে আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমারা সরকারের কাছে কৃতজ্ঞ। জমির দাম নিয়ে আমাদের আর কোনও আন্দোলন নেই। বাকি নিকাশি সমস্যা এবং কয়েকটি আন্ডারপাসের দাবিও মিটবে বলে আশা করছি।’’

শনিবার আন্দোলন কমিটির তরফে জমিদাতা সব চাষির সঙ্গে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত হয়েছে, তাঁরা আগামী সোমবার ব্লক প্রশাসন আয়োজিত শুনানিতে যাবেন। সে দিন চেক নেবেন না। নিকাশি সমস্যা মেটানো এবং আন্ডারপাস তৈরি সংক্রান্ত আবেদন করে চলে আসবেন। নিকাশি এবং আন্ডারপাস কতটা জরুরি, তা
প্রশাসন সরেজমিনে খতিয়ে দেখে সমাধানের নিশ্চয়তা দিলেই চেক নেবেন। গোটা বিষয়টি নিয়ে শীঘ্রই আলোচনায় বসা হবে বলে জানিয়েছেন পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র।

Advertisement

মহকুমাশাসক (আরামবাগ) সুভাষিণী ই বলেন, ‘‘পশ্চিম অমরপুরে জমির দামের সমস্যা কেটেছে। চাষিদের দাবিকে মান্যতা দেওয়া হয়েছে। চাষিদের বাকি দাবিগুলির যৌক্তিকতা খতিয়ে দেখে তারও ব্যবস্থা হবে।” ভাবাদিঘির সমস্যা মেটাতেও জেলা প্রশাসন চেষ্টা করছে বলে মহকুমাশাসক জানান। পশ্চিম অমরপুর থেকে ৭ কিমি পূর্বে গোঘাট ১ ব্লকের ভাবাদিঘিতে গ্রামবাসীরা আন্দোলন করছেন, দিঘি বাঁচিয়ে রেলপথ নির্মাণের জন্য।

পশ্চিম অমরপুরের আন্দোলন কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১০ সাল থেকে জমির ন্যায্য মূল্য এবং নিকাশি ব্যবস্থার দাবিতে তাঁদের আন্দোলন চলছে। ওই সময় শুনানিতে জমির দাম ধার্য হয় কাঠাপিছু ১৪ হাজার ৬৫০ হাজার টাকা। কমিটির তরফে কাঠাপিছু অন্তত ৭৫ হাজার টাকা দাবি করা হয়। পাওয়া যাচ্ছে ৯২ হাজার টাকা।

কমিটির মুখ্য উপদেষ্টা ফটিক কাইতি বলেন, “জমির দাম নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট। তবে আমাদের দাবির সঙ্গে সহমত হতে সরকার এতগুলো বছর সময় নিয়ে নিল।” একই সঙ্গে তিনি জানান, নিকাশির দাবিটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রস্তাবিত রেলপথের পুরো এলাকাটি সমতল থেকে অন্তত পাঁচ ফুট নিচু। উঁচু বাঁধ বেঁধে রেললাইন করলে পশ্চিম অমরপুর, তাজপুর, আনুড়-সহ ১০-১২টি গ্রাম বর্ষা ও বন্যায় প্লাবিত হবে। আর জমি থেকে ধান তোলার জন্য প্রয়োজনীয় আন্ডারপাসও জরুরি।

তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর (৮২.৮৭ কিমি) রেলপথের মধ্যে হুগলির তারকেশ্বর থেকে আরামবাগ হয়ে গোঘাট পর্যন্ত ৩৩.৯৪ কিমি কাজ সম্পূর্ণ হয়ে ট্রেন চলছে। অন্যদিকে, বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর থেকে ময়নাপুর পর্যন্ত ২২.৪৮ কিমির কাজও শেষ হয়েছে। সেখানেও ট্রেন চলছে। গোঘাট থেকে ভাবাদিঘির ৯৫০ মিটার বাদ দিয়ে কামারপুকুর পর্যন্ত ৫.৫০ কিমি রেলপথের কাজ হয়ে গিয়েছে।
হুগলি জেলার মধ্যে আর খালি কাজ বাকি আছে কামারপুকুর থেকে বাঁকুড়ার জয়রামবাটী পর্যন্ত ৩.৩০ কিমি। এর মধ্যে ০.৭৫৫ কিমি জমি রেলকে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি ২.৫৪৫ কিমির জমি অধিগ্রহণ করা হলেও ন্যায্য দাম না মেলায় ক্ষতিপূরণের চেক নিচ্ছিলেন না পশ্চিম অমরপুরের চাষিরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement