Arpita Mukherjee

Arpita Mukherjee: ফ্ল্যাটে এত টাকা, মাত্র পাঁচ লাখের জন্য হুমকি দিলেন অর্পিতা! অবাক রাজমিস্ত্রি শ্রীকান্ত

মথুরাবাটী গ্রামে অর্পিতার মামার বাড়ি পাকা করতে খরচ হয়েছে ১৫ লক্ষ টাকা। রাজমিস্ত্রি শ্রীকান্তকে দেওয়া হয়েছে ১০ লক্ষ। এখনও বাকি ৫ লক্ষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জাঙ্গিপাড়া শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২২ ০৬:০৯
Share:

এই বাড়িই দাঁড়িয়ে থেকে তৈরি করান অর্পিতা। ছবি: দীপঙ্কর দে

অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে প্রায় ২২ কোটি টাকা উদ্ধারের কথা শোনার পর থেকে বিস্ময় কাটছেই না শ্রীকান্ত আড়ুইয়ের। যাঁর ফ্ল্যাটে এত টাকা, তিনি পাঁচ লক্ষ টাকা বাকি রেখে দিয়েছেন! উল্টে টাকা চেয়ে ধমক শুনতে হয়েছে। অর্পিতা শ্রীঘরে। ওই টাকা আদায় করা নিয়ে চিন্তায় শ্রীকান্ত।

Advertisement

হুগলির জাঙ্গিপাড়ার দিলাকাশ পঞ্চায়েতের মথুরাবাটী গ্রামে অর্পিতার মামার বাড়ি। টালির ছাউনি দেওয়া বাড়ি ভেঙে পাকা হয়েছে এক বছর আগে। সেটি তৈরি করেছেন স্থানীয় রাজমিস্ত্রি শ্রীকান্ত। একতলা বাড়িতে দু’টি ঘর, শৌচাগার এবং রান্নাঘর। শ্রীকান্ত জানান, অর্পিতা নিজে দাঁড়িয়ে থেকে বাড়িটি তৈরি করান। খরচ হয়েছে ১৫ লক্ষ টাকা। তার মধ্যে তিনি হাতে পেয়েছেন ১০ লক্ষ টাকা। বাকি পাঁচ লক্ষ পাননি। রাজমিস্ত্রির কথায়, ‘‘এক সপ্তাহ আগে অর্পিতার মামাতো ভাই কুন্তল চক্রবর্তীর কাছে বাকি টাকা চেয়েছিলাম। তার জন্য অর্পিতা আমাকে ফোন করে হুমকির সুরে জানতে চান, কেন টাকা চেয়েছি। বলেন, ঠিক সময়ে টাকা পেয়ে যাব। আর কোনও দিন যেন তাগাদ না দিই। অবাক হয়ে যাচ্ছি,যাঁর ফ্ল্যাট থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার হল, তিনি সামান্য টাকার জন্য হুমকি দিলেন!’’

অর্পিতা গ্রেফতার হতেই ওই বাড়ি ঘিরে শোরগোল পড়েছে। গ্রামবাসীরা ভিড় জমাচ্ছেন। টুকরো-টুকরো নানা কথা উড়ছে। জানা যাচ্ছে, অর্পিতার সঙ্গে হামেশাই পার্থও আসতেন এখানে। অর্পিতা রীতিমতো ‘দিদিগিরি’ করতেন বলে পাড়া-পড়শিদের অভিযোগ।

Advertisement

অর্পিতার মা মিনতি মুখোপাধ্যায়রা আট ভাই-বোন। এক ভাই তপন চক্রবর্তী মথুরাবাটীতে থাকেন। নতুন একতলা বাড়ির পাশেই দোতলা বাড়িতে থাকেন। দু’টি বাড়ির মাঝে বড় পুকুর। তপনের বাড়িতে দুর্গাপুজো হয়। পড়শিরা জানান, দুর্গাপুজোয় এসে পার্থ পুকুরপাড়ে বসে ছিপ ফেলে মাছ ধরেছেন। পার্থ এলে পুলিশ ওই চত্বর ঘিরে রাখত। সেখান দিয়ে সাধারণ লোকের যাতায়াতে রাশ টানা হত। অর্পিতা একা এলেও গুটিকয়েক পুলিশকর্মীকে বাড়ির সামনে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যেত।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, অর্পিতা দাপট দেখাতেন। বাড়িতে গাড়ি ঢোকানোর জন্য সরকারি একটি নলকূপ তুলে ফেলা হয়। একই কারণে একটি বাড়ির সামনের রকও ভেঙে দেওয়া হবে বলে অর্পিতা বলেছিলেন।

অর্পিতার এক আত্মীয় সৌমেন চক্রবর্তীও সেখানেই থাকেন। তিনিও ক্ষুব্ধ। তাঁর কথায়, ‘‘অর্পিতা ওর মামার (তপন চক্রবর্তী) দুই ছেলের চাকরি করে দিয়েছেন। মাসির ছেলেমেয়েরাও বিভিন্ন সরকারি দফতরে চাকরি পেয়েছেন অর্পিতার জন্য। এলাকায় কি আর শিক্ষিত কেউ নেই!’’

অর্পিতার মামি বীণা চক্রবর্তী অবশ্য যাবতীয় অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘অর্পিতা বছরে একবার দুর্গাপুজোর সময় আসত। ওর সঙ্গেই পার্থবাবু গত দু’বছর এসেছিলেন। অর্পিতার এত টাকা কোথা থেকে এল, আমরা বলতে পারব না। সে অভিনয় করে, এটুকুই জানি।’’

বীণাও জানান, পুজোয় এসে পুকুরে ছিপ ফেলে মাছ ধরেছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা বর্তমান শিল্পমন্ত্রী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement