আনিসের মৃত্যু ঘিরে বিক্ষোভ দানা বাঁধছে হাওড়ার আমতায়।
মাস ছ’য়েক আগে এলাকায় রক্তদান শিবিরের আয়োজনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে আনিস খানের বিবাদের যে ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে, তার সঙ্গে ছাত্রনেতার রহস্য-মৃত্যুর কোনও যোগ বোধহয় নেই। ঝামেলা আগেই মিটে গিয়েছিল, আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে এমনটাই দাবি করলেন আনিসেরই এক প্রতিবেশী।
আনিসের মৃত্যু ঘিরে বিক্ষোভ দানা বাঁধছে হাওড়ার আমতায়। সেই আবহে গত বছর মে মাসে পুলিশে দায়ের করা আনিসের একটি অভিযোগপত্রের ছবি নেটমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, সেই সময় আমতা থানায় অভিযোগ দায়ের করে আনিস জানিয়েছিল, এলাকায় রক্তদান শিবির আয়োজন করা নিয়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়ার পর থেকেই তাঁকে এবং তাঁর পরিবারকে ক্রমাগত হুমকি দিয়ে চলেছেন শাসকদলের স্থানীয় কর্মীরা। পরিবারের সদস্যদের মারধর এবং বাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলেই অভিযোগে জানিয়েছিলেন আনিস। তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে প্রাণে মেরে ফেলা হতে পারে, এই আশঙ্কা থেকে পুলিশের নিরাপত্তাও চেয়েছিলেন তিনি।
শাসকদলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে আনিসের দায়ের ওই অভিযোগকে সামনে রেখেই তাঁর ‘খুন’-এর তদন্তের দাবিতে সরব হয়েছে বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআই। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ময়ূখ বিশ্বাস বলেন, ‘‘সুপরিকল্পিত ভাবে ঠান্ডা মাথায় আনিসকে খুন করা হয়েছে। ছেলেটির অপরাধ বলতে এলাকায় রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেছিল সে। আর তৃণমূল ও বিজেপি-র বিরোধিতা করেছিল ও। এই হত্যার বিচার-বিভাগীয় তদন্ত চাই।’’
ওই ঘটনারই প্রেক্ষিতে প্রতিবেশী জসীমদ্দিন মল্লিক বলেন, ‘‘গত বছর রক্তদান শিবির নিয়ে একটা ঝামেলা হয়েছিল। আনিস থানায় অভিযোগও দায়ের করেছিল। তার পর নিরাপত্তাও দেওয়া হয়েছিল ওঁকে। কিন্তু ওই ঝামেলা তো মিটে গিয়েছে। আমার মনে হয় না, ওই ঘটনার সঙ্গে ওঁর মৃত্যুর কোনও যোগ আছে।’’
গ্রামবাসীরা বলছেন, আনিস ভাল ছেলে। বিপদে-আপদে সকলেরই পাশে দাঁড়াতেন। গ্রামের সবার সঙ্গেই ওঁর ভাল সম্পর্ক। আনিসের মৃত্যুর ঘটনায় যাঁরা জড়িত, তাঁদের শাস্তি চাইছে গোটা সারদা গ্রাম। জসীমের কথায়, ‘‘ছেলের মৃত্যুতে আনিসের বাবা মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছেন। আমাদের এখন একটাই দাবি, ঘটনার সঠিক তদন্ত হোক। দরকারে সিবিআই তদন্ত হোক। আমরা চাই, দোষীদের খুঁজে বার করে তাদের শাস্তি দেওয়া হোক। আনিসের মৃত্যুর বিচার চাই আমরা।’’