ছিনতাইয়ের মুখে পড়া তিন মহিলা। —নিজস্ব চিত্র।
সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই একই দিনে পর পর তিনটি ছিনতাইয়ের ঘটনায় চাঞ্চল্য হাওড়ার ডোমজুড়ে। তিন মহিলার দুল-হার ছিনিয়ে নিয়ে পালানোর অভিযোগ উঠল দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। বাইকে চেপে এসে দুষ্কৃতীরা ডোমজুড়ের আলাদা আলাদা তিন জায়গায় ছিনতাই করে বলে অভিযোগ। যদিও এই তিন ঘটনার মধ্যে কোনও যোগসূত্রে রয়েছে কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়। তিন জায়গাতেই একই দুষ্কৃতীরা ছিনতাই চালিয়েছিল কি না স্পষ্ট নয় তা-ও।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বুধবার সকালে ফুল তুলতে বেরিয়েছিলেন অলকা পাড়ুই নামে স্থানীয় এক বৃদ্ধা। সেই সময় বাইক বাহিনী এসে তাঁর কানের সোনার দুল জোর করে ছিনিয়ে নেয় বলে অভিযোগ। ধস্তাধস্তিতে তাঁর দুই কানের লতি ছিঁড়ে গিয়েছে। অলকার কথায়, ‘‘আমি ফুল তুলতে গিয়েছিলাম। তখনই মোটর বাইকে এসে দু’জন আমার পিছনে এসে দাঁড়ায়। আমার ভয় ভয় করছিল। আমি বাড়ির কাছে চলে আসি। তখন এক জন এসে আমার কানের দুল ছিঁড়ে নিয়ে চলে গেল।’’ এই নিয়ে তাঁরা পুলিশের দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছেন অলকার পরিবারের সদস্যেরা।
হীরা পাত্র নামে ডোমজুড়ের অন্য এক মহিলাও প্রাতঃভ্রমণে গিয়ে বাইক-দুষ্কৃতীদের ছিনতাইয়ের মুখে পড়েন বলে অভিযোগ। অভিযোগ, দুষ্কৃতীরা তাঁর গলার সোনার হার ছিনিয়ে পালিয়ে যায়।
অন্য দিকে, ভান্ডারদহ এলাকাতেও আরতি নস্কর নামে এক বৃদ্ধা প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে ছিনতাইকারীদের মুখে পড়েন বলে অভিযোগ। অভিযোগ, ভোজালি দিয়ে প্রাণে মারার ভয় দেখিয়ে তাঁর হাতের চুড়ি ছিনিয়ে নেয় দুষ্কৃতীরা। আরতি বলেন, ‘‘আমি রোজ হাঁটতে যাই। আজকেও গিয়েছিলাম। আমি যখন হাঁটছি তখন দু’জন বাইকে করে এসে আমাকে একজনের ঠিকানা জিজ্ঞাসা করে। আমি ওই নামে কাউকে চিনি না বলার পর একটা ভোজালি বার করে আমার গলায় ধরে। আমাকে হাতের চুড়ি খুলতে বলে। চুড়ি ধরে জোর করে টানাটানি শুরু করে। আমি বলি যে সোনার চুড়়ি নয়, ইমিটেশন। তা সত্ত্বেও টানা হ্যাঁচড়া করে চুড়ি দু’টি নিয়ে পালিয়ে যায়। ওদের মুখে মাস্ক ছিল। মুখে মদের গন্ধ উঠছিল। খুব আতঙ্কে রয়েছি।’’
এর পাশাপাশি, রেখা নস্কর নামে এক মহিলাকেও ছুরি দেখিয়ে ছিনতাইয়ের চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ। তবে লোকজন চলে আসায় দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। রেখা বলেন, ‘‘ফুল তুলতে গিয়েছিলাম। ওরা মুখে কালো মাস্ক পরেছিল। ছুরি বার আমাকে খুন করবে বলে শাসায়। আমার গা-হাত-পা থরথর করে কাঁপছিল। তার পর লোক দেখে পালিয়ে যায়।’’
পুরো ঘটনায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন জোমজুড়ের বাসিন্দারা। বাপি ঠাকুর নামে স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘পুলিশ নিষ্ক্রিয়। ডোমজুড়ের ডাকাতির ঘটনায় যাঁরা যুক্ত, তাঁদের এখনও পুলিশ ধরতে পারেনি। এখন আবার ছিনতাই। এলাকার মানুষ আতঙ্কে রয়েছেন।’’