পড়ে রয়েছে গাছের কাটা অংশ। গোঘাটের সুন্দরপুরে। নিজস্ব চিত্র।
বন দফতর অনুমতি দেয়নি। পঞ্চায়েত সমিতির বন ও ভূমি স্থায়ী সমিতির ছাড়পত্র নেই। দরপত্রও ডাকা হয়নি। সর্বোপরি, সরকারি নির্দেশমতো ১৫ জুন থেকে তিন মাস কোনও গাছ কাটা যাবে না। এ সব বিধিনিষেধের তোয়াক্কা না করে গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগ উঠল গোঘাট ২ ব্লকের তৃণমূল পরিচালিত পশ্চিমপাড়া পঞ্চায়েতের উপপ্রধানের বিরুদ্ধে।
রবিবার সকালে সুন্দরপুর খেলার মাঠ সংলগ্ন খাসজমিতে বাম আমলে লাগানো ইউক্যালিপটাস গাছ কাটা হচ্ছে দেখে গ্রামবাসীরা আপত্তি জানান। তা উপেক্ষা করেই উপপ্রধান নিজে দাঁঢ়িয়ে থেকে প্রায় ১২টি গাছ কাটান বলে অভিযোগ। বিষয়টি বন দফতরে নজরেও আনেন গ্রামবাসীরা।
অভিযোগ উড়িয়ে সকালে উপপ্রধান মাহাবুল জমাদার দাবি করেন, ‘‘বাড়ি বাড়ি জল সরবারহের জন্য জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের পরিকাঠামো গড়তে এখানে পঞ্চায়েত থেকে কাঠা তিনেক জায়গা নির্দিষ্ট করা হয়েছে। ওই এলাকার মধ্যে গাছগুলি বৈধ অনুমতি নিয়েই গাছ কাটা হয়েছে।” বিকেলে অবশ্য সুর বদলে তিনি স্বীকার করেন, ‘‘যথাযথ অনুমোদন না নিয়ে ভুল করেছি। রেঞ্জ অফিসারের কাছে ফোন করে নিজের দোষ স্বীকার করেছি। শাস্তিও মাথা পেতে নেব বলেছি।”
গোঘাট ২ পঞ্চায়েত সমিতি বন ও ভূমি স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ তনুশ্রী মণ্ডল বলেন, “আমাদের ছাড়পত্র দেওয়া তো দূর, আমরা সমস্ত পঞ্চায়েতকে সতর্ক করেছি, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো তিন মাস কোনও ভাবেই গাছ কাটা যাবে না। এলাকায় প্রচারও করেছি। তারপরেও গাছ কাটা গর্হিত কাজই হয়েছে। প্রশাসন বিষয়টা দেখছে।” তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সৌমেন দিগার বলেন, “বেআইনি কাজে দলের কোনও প্রশ্রয় নেই। আইনে যা আছে, সেটাই হবে।”
বন দফতরের আরামবাগ রেঞ্জ অফিসার আসরাফুল ইসলাম বলেন, “অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা হয়েছে। কাটা গাছ আপাতত পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষকে সোমবার ডাকা হয়েছে। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ওই বনকর্তা জানান, সরকারি নির্দেশিকায় বলা আছে, তিন মাস গাছ কাটা বন্ধ থাকলেও কোনও গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রকল্প বা জরুরি ভিত্তিতে কিছু করার থাকলে খতিয়ে দেখে অনুমোদন দেওয়া যেতে পারে। তবে, সে ক্ষেত্রেও সব নিয়মনীতি মেনেই অনুমোদনের জন্য আবেদন করতে হবে।