এ ভাবেই ব্যবহার করা হয়েছে জাতীয় পতাকা। —নিজস্ব চিত্র।
এ বার জাতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের ‘বঙ্গীয় সাধারণের গ্রন্থাগার ও কর্মী কল্যাণ সমিতি’র বিরুদ্ধে। আজ, রবিবার হাওড়া জেলা গ্রন্থাগারে হাওড়া জেলা কমিটি ও পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেস কমিটি বঙ্গীয় সাধারণের গ্রন্থাগার ও কর্মী কল্যাণ সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভার আয়োজন করেছে। অভিযোগ, সেই সভাস্থলের গেটে জাতীয় পতাকা কেটে লাগানো হয়েছে দু’টি বাঁশের গায়ে। হাওড়া জেলা গ্রন্থাগারের প্রবেশপথে জাতীয় পতাকার এই অবমাননা দেখে এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। তাঁরা এই ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়েছেন।
আজ ওই বার্ষিক সাধারণ সভার আয়োজন করা হয়েছে জেলা গ্রন্থাগারের সেমিনার হলে। সেই অনুষ্ঠানে হাওড়ার একাধিক তৃণমূল নেতার পাশাপাশি উপস্থিত থাকার কথা রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য-সহ বঙ্গীয় সাধারণের গ্রন্থাগার ও কর্মী কল্যাণ সমিতি কর্তৃপক্ষের। অনুষ্ঠান শুরু হবে সকাল ১০টায়। তার জন্য শনিবার সকাল থেকেই মঞ্চ ও প্রবেশদ্বার সাজানোর কাজ শুরু হয়। গ্রন্থাগারের বাইরের অংশ মুড়ে দেওয়া হয়েছে সংগঠনের পতাকায়। এ দিন বিকেলে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, গেটের সামনে দু’টি বাঁশের গায়ে জড়ানো হয়েছে জাতীয় পতাকার উপরের গেরুয়া অংশ। নীচের সবুজ অংশটি কেটে বাদ দিয়ে শুধুমাত্র পতাকার কেন্দ্রস্থলে থাকা অশোকচক্রের অংশটি দিয়ে মোড়া হয়েছে অন্য বাঁশ।
জাতীয় পতাকা এ ভাবে কেটে লাগানোর বিষয়টি প্রথমে নজরে আসে এলাকার এক দোকানদারের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই দোকানদার বলেন, ‘‘দুপুরের দিকে বিষয়টি আমার নজরে পড়ে। আমিই ওই ঘটনার কথা আশপাশের সকলকে জানাই। তখন সকলেই বলেন, এ ভাবে জাতীয় পতাকার অবমাননা আমরা সহ্য করব না। এর পরেই আমরা গ্রন্থাগারের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা কমিটির লোকজনের সামনে গিয়ে বিষয়টির প্রতিবাদ করি।’’ এলাকার আর এক বাসিন্দা সমর দেয়াশি বলেন, ‘‘এমন একটি ঘোরতর অন্যায়ের কথা জানানো হলেও গ্রন্থাগারের লোকজন গুরুত্ব দেননি। তবে আমরা বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে সোমবার জানাব।’’
এ বিষয়ে বঙ্গীয় সাধারণের গ্রন্থাগার ও কর্মী কল্যাণ সমিতির হাওড়া জেলা কমিটির সম্পাদক তাপস চক্রবর্তীকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘পতাকার কোনও অংশই কেটে লাগানো হয়নি। ওই অশোকচক্রের অংশটি আমাদের সংগঠনের পতাকার অংশ। তাতে সংগঠনের নামও লেখা রয়েছে।’’ তাপস এ কথা বললেও ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গিয়েছে, অশোকচক্রের কোথাও সংগঠনের নাম নেই।
জাতীয় পতাকার অবমাননার এই অভিযোগ সম্পর্কে হাওড়া সদরের তৃণমূল সভাপতি কল্যাণ ঘোষ বলেন, ‘‘এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তবে যা ঘটেছে বলে শুনছি, তা বাঞ্ছনীয় নয়। কারা এটা করেছে, আমরা খোঁজ নিয়ে দেখছি। প্রয়োজনে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ এই অবাঞ্ছিত ঘটনা সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে শুরু করেছে জেলা প্রশাসনও। জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘এই বিষয়টি আমরা পরে জেনেছি। খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে, ঠিক কী ঘটেছে।’’