বৃষ্টির পর দুর্ভোগ! হাওড়ার একটি রাস্তার দৃশ্য। —নিজস্ব চিত্র।
ঘূর্ণিঝড় রেমালের পর বৃষ্টির জমা জলে আতঙ্ক ছড়িয়েছে হুগলির ডানকুনিতে। কারণ, সাপ। অন্য দিকে, ২৪ ঘণ্টা আগে বৃষ্টি থেমে গেলেও হাওড়ার বহু রাস্তা এখনও জলবন্দি। হাঁটু পর্যন্ত জল পেরিয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।
বৃষ্টিতে জলমগ্ন ডানকুনি পুরসভার একাধিক ওয়ার্ড। বৃষ্টি বন্ধ হলেও দুর্ভোগ কাটেনি বাসিন্দাদের। নর্দমা উপচে বাড়ির ভিতরে ঢুকছে নোংরা জল। সেই জলেই ঘুরে বেড়াচ্ছে সাপ। ইতিমধ্যে সাপের কামড় খেয়ে চিকিৎসাধীন ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের দুই ব্যক্তি। জলমগ্ন ডানকুনি পুরসভার ১৩, ১৪ এবং ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের একাধিক জায়গা। সাপের উপদ্রবে কার্যত ঘুম উড়েছে বাসিন্দাদের। স্থানীয় সূত্রে খবর, মঙ্গলবার ডানকুনির ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ সুভাষপল্লি এলাকায় দু’জনকে সাপে কামড়েছে। এক জনের নাম দীনেশ পাসোয়ান। অন্য জন পূর্ণিমা কৈরী। দু’জনকেই নিয়ে যাওয়া হয় চণ্ডীতলা গ্রামীণ হাসপাতালে। সেখান থেকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর পূর্ণিমাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে অন্য এক জন এখনও চিকিৎসাধীন।
পূর্ণিমার নাতি শ্রীকান্ত বলেন, ‘‘বাড়ির ভিতরেও একহাঁটু জল। তার মধ্যে বাস করছি দু’দিন ধরে। সকালে ঠাকুমা ফুল তুলতে বেরিয়েছিলেন বাগানে। সেখানেই জলের মধ্যে কিছু একটা কামড়ায়। বাড়ি এসে দেখেন পা দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছে। তখনই বাড়ির লোকজন দেখতে পান, একটি সাপ চলে যাচ্ছে ওই জল দিয়ে।’’ এই ঘটনার পর থেকে সাপের আতঙ্ক ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, বৃষ্টি হলেই দীর্ঘ দিন ধরে ডানকুনির কয়েকটি ওয়ার্ডে জল জমে থাকে। একটু ভারী বৃষ্টি হলেই ভয়ে থাকতে হয় সকলকে। নর্দমার নোংরা জল ঢুকে যায় ঘরে। তখন পোকামাকড় থেকে সাপ ঢুকে পড়ে শোয়ার ঘরেও।
এ বিষয়ে ডানকুনি পুর কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, তাঁরা ব্যবস্থা নিচ্ছেন। পাম্প চালিয়ে জল বার করে দেওয়া হবে। সাপ-পোকামাকড়ের উপদ্রব কমাতে ওষুধ ‘স্প্রে’ করা হবে।
হাওড়ার বহু গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় মঙ্গলবারও জলবন্দি। ড্রেনেজ ক্যানাল রোড, ইস্ট ওয়েস্ট বাইপাস, রামচরণ শেঠ রোড-সহ অনেক রাস্তাতেই জল জমে রয়েছে। ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন মানুষজন। জমা জল পেরিয়েই যেতে হচ্ছে কাজে। শামিম রাজা নামে টিকিয়াপাড়ার এক বাসিন্দা জানান, অল্প বৃষ্টিতে এলাকায় জল জমে যায়। আর ভারী বৃষ্টি হলে তো কথাই নেই। এক সপ্তাহ লেগে যায় জল নামতে। তাঁর কথায়, ‘‘জন্ম থেকে এই সমস্যা দেখে আসছি। কিন্তু কাউকে দেখলাম না সমাধানে এগিয়ে আসতে।’’
স্থানীয়দের অভিযোগের কথা জানাতে হাওড়া পুরসভার মুখ্য প্রশাসক সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘অতিরিক্ত পাম্প চালিয়ে জল নামানো হচ্ছে। অধিকাংশ জায়গায় জল নেমে গিয়েছে। বাকি রাস্তায় দ্রুত জল নেমে যাবে।’’