নাবালকের রহস্যমৃত্যুতে উত্তেজনা এলাকায়। নিজস্ব ছবি।
দিন পনেরো আগে নিখোঁজ হয়েছিল নাবালক। সোমবার তার রহস্যমৃত্যুর খবর জানতে পেরেই উত্তাল হুগলির মগরা। নাবালকের ‘প্রেমিকা’র পরিবারের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তুলে তাদের বাড়িতে চড়াও হয় মৃতের পরিবার ও পড়শিরা। তার জেরেই উত্তেজনা ছড়ায় মগরা-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের সুকান্তপল্লি এলাকায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে এলে পুলিশের সঙ্গেও গ্রামবাসীদের খণ্ডযুদ্ধ বাধে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, গত ১৪ নভেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিল ওই এলাকার বছর সতেরোর সুজয় শীল। মগরা থানায় নিখোঁজ ডায়েরিও করা হয় পরিবারের তরফে। তার পর থেকে আর কোনও খবর মেলেনি। ওই ঘটনার ১৫ দিন পর সোমবার গ্রামবাসীরা জানতে পারেন, সুজয়ের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজের দিন রাতেই সুজয়ের দেহ উদ্ধার রেললাইন থেকে উদ্ধার করেছে ব্যান্ডেলের রেলপুলিশ (জিআরপি)। এই খবর পেয়ে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালের মর্গে গিয়ে নাবালকের দেহ শনাক্ত করে আসে পরিবার। এর পরেই উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়।
ছেলের ‘প্রেমিকা’র পরিবারের বিরুদ্ধেই খুনের অভিযোগ তুলছেন সুজয়ের পরিবার এবং গ্রামবাসীরা। তাদের দাবি, সুজয় ও তার ‘প্রেমিকা’র মধ্যে খুনের সম্পর্ক মেনে নেয়নি মেয়েটির পরিবার। তা নিয়ে ঝামেলা চলছিল। ‘প্রেমিকা’র পরিবারের আপত্তি না শোনায় নাবালককে খুন করা হয়েছে। অভিযোগ, ‘ক্ষিপ্ত’ গ্রামবাসীদের সুজয়ের ‘প্রেমিকা’র বাড়িতেও হামলা চালিয়েছে। মেয়েটির পরিবারের সদস্যদের মারধরও করা হয়েছে। এই ঘটনার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ।
এই ঘটনায় হুগলি গ্রামীণ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্ত বলছে, রেলে কাটা পড়েছে ছেলেটি। তবে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে ময়নাতদন্তের রিপোর্টের দিকেই তাকিয়ে আছে পুলিশ। এই ঘটনায় সরকারি ভাবে কেউ আটক বা গ্রেফতার হননি।’’
পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নামলে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গ্রাম। অভিযোগ, গ্রামবাসীরা পুলিশকে নিশানা করে ইট ছুড়েছেন। পুলিশের বিরুদ্ধেও পাল্টা লাঠিচার্জের অভিযোগ উঠেছে। গ্রামবাসীদের দাবি, পুলিশের মারে বেশ কয়েক জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মগরা ব্লক হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, গোটা এলাকায় বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের বক্তব্য, ‘‘আজ ছেলেটির দেহ শনাক্তকরণের পর ছেলেটির পরিবার প্রেমিকার বাড়িতে চড়াও হয়। সেখান থেকেই ঝামেলার সূত্রপাত। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’’