— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
বেলগাছিয়া ভাগাড়ের পরিস্থিতি কতটা বিপজ্জনক? খতিয়ে দেখতে এ বার এলাকার মাটি পরীক্ষা করে দেখবে প্রশাসন। ভাগাড়ের পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখা পর এ বিষয়ে রবিবারই একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ডেকেছিলেন হাওড়ার জেলাশাসক দিপপ্রিয়া পি। সেই বৈঠকের পর জানানো হয়েছে, গোটা এলাকার ‘সয়েল টেস্টিং’ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সোমবার থেকেই বেলগাছিয়া ভাগাড় এলাকায় যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ শুরু হবে। সরানো হবে এলাকার বাকি বাসিন্দাদেরও। পাশাপাশি, সোমবার ভাগাড়ের অবস্থা পরিদর্শন করতে যাবেন খোদ মেয়র ফিরহাদ হাকিম ওরফে ববি। সোমবার দুপুর ১২টা নাগাদ বেলাগছিয়া যেতে পারেন তিনি।
রবিবার ভাগাড় পরিদর্শনের পর বৈঠকটি ডাকেন জেলাশাসক। বৈঠকে পুলিশ কমিশনার এবং পুরসভার আধিকারিকের পাশাপাশি ছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধনকুমার ঘোষের নেতৃত্বে চার জন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপকও। তাঁরা পরিস্থিতির সাপেক্ষে বেশ কিছু স্বল্পমেয়াদি এবং দীর্ঘমেয়াদি পরামর্শ দিয়েছেন। বৈঠকের পর জেলাশাসক জানান, ভাগাড়ের মাটি পরীক্ষা করে দেখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তার পরেই পরিস্থিতি কতটা বিপজ্জনক, তা জানা যাবে। এ ছাড়া, ভাগাড়ে জঞ্জালের যে পাহাড় জমে রয়েছে, তা কমানোরও চেষ্টা করা হবে। এ জন্য ‘বায়োমাইনিং’ পদ্ধতিতে এগোবে প্রশাসন। এর জন্য যতটা এলাকা জুড়ে প্রভাব পড়তে পারে, সেই ব্যাসার্ধের সমস্ত বাড়ি খালি করার ব্যবস্থা করা হবে। এই সমস্ত কাজ সোমবার থেকেই শুরু হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক।
পাশাপাশি, যে সব বাড়ি, ড্রেন এবং রাস্তায় ফাটল ধরেছে, সেগুলি মেরামতের কাজও শুরু হবে শীঘ্রই। ইতিমধ্যে ২০টি পরিবারকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গত বুধবার রাতে হাওড়া পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বেলগাছিয়া ভাগাড়ে ধস নামে। এর ফলে ভূগর্ভস্থ দু’টি পাইপলাইনে বড়সড় ফাটল দেখা দেয়। বৃহস্পতিবার অকুস্থলে গিয়েছিলেন পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী, প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য বাপি মান্না-সহ পুরসভার পদস্থ ইঞ্জিনিয়ার ও অফিসারেরা। মেরামতির কাজও শুরু হয়েছিল। কিন্তু শুক্রবার সকালে ফের ধস নেমে পুরো পাইপলাইনটিই ফেটে যায়। যার জেরে কাজও বন্ধ হয়ে যায়। ধসের জেরে ফাটল ধরে আশপাশের বাড়িতেও।
অন্য দিকে, ধসের জেরে পাইপলাইন ফেটে যাওয়ায় চার দিন ধরে তীব্র জলকষ্ট শুরু হয়েছে হাওড়ার বিস্তীর্ণ এলাকায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে আপাতত জলের গাড়ি পাঠাচ্ছে কলকাতা পুরসভা। গত তিন দিন ধরে কলকাতা পুরসভার ১৫টি জলের ট্যাঙ্ক পাঠানো হয়েছে সেখানে। প্রশাসনিক সূত্রে দাবি, যত দিন না হাওড়ায় পানীয় জলের সঙ্কট মিটছে, তত দিন কলকাতা পুরসভা থেকে জলের গাড়ি পাঠানো হবে। অথচ এত কিছু সত্ত্বেও এখনও পর্যাপ্ত জল পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন বাসিন্দারা। তবে জেলাশাসক এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। জলের সমস্যা মিটে গিয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।