প্রতীকী ছবি।
নিজস্ব সংবাদদাতা
উলুবেড়িয়া
হাওড়া জেলায় অ্যাক্টিভ করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা নেমে এল একশোর নীচে। শনিবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিনে এই রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, অ্যাক্টিভ আক্রান্ত রয়েছেন ৯৮ জন। শুধু তাই নয়, গত চার দিনে নবান্নের জেলায় করোনা সংক্রমণে মৃত্যুর ঘটনাও নেই। স্বভাবতই এই পরিসংখ্যান স্বস্তি দিচ্ছে স্বাস্থ্য এবং প্রশাসনের কর্তাদের।
রাজ্যের অন্যান্য অংশের সঙ্গে এই ছবি অবশ্য সঙ্গতিপূর্ণ। তবে, একটা সময়ে হাওড়া জেলায় সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার যেভাবে বেড়ে গিয়েছিল, তা প্রশাসনের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এখন ক্রমহ্রাসমান সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার স্বস্তি দিলেও জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারে শিথিলতা আনতে নারাজ। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাস বলেন, ‘‘স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার, মাস্ক পরা এবং দূরত্ব বিধি পালন করতেই হবে।’’ এর সুফল প্রসঙ্গে ওই স্বাস্থ্যকর্তা মনে করিয়ে দেন, এই সব বিধি মেনে চললে শুধু করোনা নয়, অন্য অনেক অসুখ থেকেও রেহাই মিলবে।
গত জানুয়ারি মাস থেকে হাওড়ায় দৈনিক সংক্রমিতের সংখ্যা কমতে শুরু করে। তবে মৃত্যুর সংখ্যা কমেনি। এর ফলে চিন্তায় ছিল জেলা স্বাস্থ্য দফতর। মৃত্যুর সংখ্যা কমাতে নানা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। যেমন সংক্রমিতের অবস্থা গুরুতর হলেই বাড়িতে চিকিৎসা না করিয়ে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া, তাঁর উপরে কড়া নজরদারি চালানো প্রভৃতি। গত কয়েক দিনে মৃত্যুর হার শূন্য হওয়ায় স্বাস্থ্যকর্তাদের মুখে হাসি ফুটেছে। সব মিলিয়ে বর্তমান পরিস্থিতি ইতিবাচক বলেই তাঁরা মনে করছেন।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, সংক্রমণ কমতে থাকায় করোনা হাসপাতালের শয্যা সংখ্যাও কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন জেলায় তিনটি করোনা হাসপাতাল আছে। তার মধ্যে একটি হল ফুলেশ্বরের বেসরকারি হাসপাতাল। সেখানে শয্যা সংখ্যা ২০টি কমিয়ে আনা হয়েছে। লিলুয়ার সত্যবালা আইডি এবং বালিটিকুরি কোভিড হাসপাতালেও শয্যা সংখ্যা কমানো হয়েছে। তিনটি হাসপাতালেই করোনা রোগী নেই বললেই চলে। গড়ে তিনজন করে ভর্তি আছেন এই তিনটি হাসপাতালে।
শনিবার রাজ্যের প্রকাশিত বুলেটিনে হাওড়ায় দৈনিক সংক্রমিতের সংখ্যা ছিল ১০। তার আগের দিন সংক্রমিত হয়েছিলেন ৬ জন। ওই দিন অ্যাক্টিভ আক্রান্ত ছিলেন ১০৩ জন। করোনায় শেষ মৃত্যু হয়েছিল গত ৮ ফেব্রুয়ারি। ওই দিন এক জন মারা যান।
মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘করোনা মোকাবিলায় সাধারণ প্রশাসন, স্বাস্থ্য দফতর এবং পুলিশ সমন্বয় করে যেভাবে কাজ করেছে, এটা তার পুরষ্কার। টিকাকরণ শুরু হয়ে গিয়েছে। ফলে সংক্রমণের আশঙ্কা আরও কমে যাবে। তবে করোনা বিধি সবাইকে মেনে চলতে হবে।’’