হুগলী সফরে যাবেন অভিষএক। ছবি পিটিআই।
আগামী ৫ থেকে ৭ জুন ‘নবজোয়ার’ কর্মসূচিতে হুগলি জেলা সফর করবেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের অন্দরে ব্যস্ততা শুরু হয়ে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার চুঁচুড়ায় দলীয় বৈঠক হয়েছে।
তৃণমূল শিবির জানাচ্ছে, ৫ তারিখে জাঙ্গিপাড়া থেকে ফুরফুরা, মশাট হয়ে চণ্ডীতলা পর্যন্ত রোড-শো করবেন অভিষেক। ঢুকবেন ফুরফুরা শরিফে। দ্বিতীয় পর্বে চণ্ডীতলা থেকে সিঙ্গুর পর্যন্ত রোড-শো। সন্ধ্যায় সিঙ্গুরে জনসভা। রাত্রিবাস হরিপালে। দ্বিতীয় দিন তারকেশ্বর মন্দিরে পুজো দিয়ে কর্মসূচি শুরু। খানাকুলে জনসভা সেরে আরামবাগ হয়ে গোঘাট পর্যন্ত রোড-শো। সন্ধ্যায় আরামবাগে অধিবেশন। তৃতীয় দিন ধনেখালি থেকে পান্ডুয়া রোড-শো। জনসভা করবেন পান্ডুয়ায়। সন্ধ্যায় বলাগড়ে অধিবেশন হবে। সেখানেই রাত্রিবাস করার কথা। পরের দিন নদিয়ায় চলে যাবেন অভিষেক।
জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব জানান, পঞ্চায়েত এলাকার যথাসম্ভব বেশি জায়গা যাতে অভিষেক ছুঁতে পারেন, সে ভাবেই ‘রোড-ম্যাপ’ তৈরি করা হয়েছে। আরামবাগ এবং বলাগড়ে অধিবেশনে পঞ্চায়েতের প্রার্থী বাছাইয়ে ভোট নেওয়া হবে।
অভিষেকের এই সফর নিয়ে বিরোধীদের বক্তব্য, নিয়োগ দুর্নীতি এবং পাচার-কাণ্ডে হাওয়া খারাপ বুঝে অভিষেক ‘নাটক’ করতে আসছেন। আগের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল ভোট ‘লুট’ করেছিল এবং বিরোধীদের প্রার্থী দিতে দেওয়া হয়নি বলে তাদের অভিযোগ।
বিজেপির রাজ্যনেতা স্বপন পাল বলেন, ‘‘তদন্তের মুখে ওঁর (অভিষেকের) ‘চাচা আপনা প্রাণ বাঁচা’ অবস্থা। দলটার রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি। কর্মসূচিতে পুরো পুলিশ-প্রশাসনকে নামিয়ে মানুষের টাকা নয়ছয় করা হচ্ছে। ভোট লুটের মহড়া চলছে, জেলায় জেলায় বিশৃঙ্খলায় স্পষ্ট। তবে, মানুষকে বার বার বোকা বানানো যাবে না।’’ সফরের খরচ নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা।
তৃণমূলের হুগলি-শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা চাঁপদানির বিধায়ক অরিন্দম গুঁইনের পাল্টা দাবি, ‘‘বিরোধীরা হালে পানি পাচ্ছেন না। তাই, যা খুশি বলছেন। তৃণমূলের মতো দলে ভোটে দাঁড়ানোর ইচ্ছা সকলেরই থাকতে পারে। সেই নিয়ে উদ্দীপনা থাকে। এটা বিশৃঙ্খলা নয়।’’ তৃণমূল মুখপাত্র ও মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জননেতা। তাঁর টানে লক্ষ লক্ষ মানুষ আসেন। নিরাপত্তা এবং ভিড় সামাল দিতে পুলিশ-প্রশাসনকে তো সেই মতোই ব্যবস্থা করতে হবে।’’
তৃণমূল নেতৃত্ব যা-ই বলুন, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এবং ভোটে দাঁড়ানো নিয়ে কোন্দল যাতে সামনে না আসে, তা নিশ্চিত করা দলের কাছে পরীক্ষা বলে অনেকেই মনে করছেন। কর্মসূচির খরচ নিয়ে অরিন্দমের দাবি, দলের সদস্য, কর্মীরা সাধ্যমতো সাহায্য করছেন। তাতেই কর্মসূচির খরচ উঠবে। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘গত বিধানসভা ভোটে বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে কতখরচ করেছিল, সেই হিসাবটা ওদের নেতারা দিন।’’