—প্রতীকী ছবি।
বাবার কাছে তোলা তুলতে আসা দুই দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে ছেলে রুখে দাঁড়ানোয় তাঁকে লক্ষ্য করে চলল গুলি। যদিও অল্পের জন্য গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায় প্রাণে বেঁচে যান ওই যুবক। তবে পাইপগানের বাট দিয়ে মেরে তাঁর মাথা ফাটিয়ে দেয় এক দুষ্কৃতী। এর পরে যুবকের বাবার সোনার হার ছিঁড়ে নিয়ে পালায় তারা। মঙ্গলবার ভোরে ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার জগাছা থানা এলাকার রামরাজাতলার কাছে বকুলতলায়। এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ভোর সাড়ে ৫টার সময়ে বকুলতলা এলাকায় শম্ভুনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক ব্যক্তির ভাড়ায় নেওয়া বাড়ির দরজায় কড়া নেড়ে ডাকাডাকি শুরু করে দুই অচেনা যুবক। বাইরে বেরিয়ে আসেন শম্ভুনাথবাবুর ছেলে জয়ন্তকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। আন্দুলের বাসিন্দা শম্ভুনাথবাবু বকুলতলা লেনে জমি কিনে সম্প্রতি বাড়ি তৈরি শুরু করেছিলেন।
একটি ওষুধ সংস্থার এরিয়া ম্যানেজার জয়ন্ত বলেন, ‘‘আমি দরজা খুলে বাইরে আসতে অচেনা ওই দুই ব্যক্তি জানায়, তারা আমার বাবার সঙ্গেই কথা বলবে। এর পরে বাবা বেরোতে বাড়ি করার জন্য টাকা দাবি করে ওরা। বাবাকে একটু দূরে ডেকে নিয়ে গিয়ে ওরা কথা বলতে শুরু করে।’’
জয়ন্ত জানান, তাঁর বাবা ওই দু’জনকে বলেন যে, স্থানীয় ক্লাবের সঙ্গে কথা বলে তবে টাকা দেবেন। কিন্তু হঠাৎই তাঁর বাবার কলার চেপে ধরে একটি পাইপগান বার করে শাসাতে শুরু করে ওই দুই দুষ্কৃতী। এই দেখে জয়ন্ত এগিয়ে যেতেই এক জন বলে ওঠে, ‘ছেলেটাকেই শেষ করে দে’। এর পরে এক দুষ্কৃতী তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে দেয়। সেটি বাড়ির সদর দরজায় লাগে। দ্বিতীয় গুলি ভরার সময়ে জয়ন্ত এক দুষ্কৃতীকে জোরে ধাক্কা মারলে সে পড়ে যায়। অন্য বন্দুকধারী তখন মাথায় পাইপগানের বা ট দিয়ে সজোরে আঘাত করলে তাঁর মাথা ফেটে যায়। তত ক্ষণে এলাকার লোকজন বেরিয়ে পড়ায় দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়।
ঘটনার পর এ দিন বেলায় শম্ভুনাথবাবু বলেন, ‘‘এলাকায় এই রকম ব্যাপার হতে পারে জানতাম না। তবে বাড়ি করলে স্থানীয় ক্লাবকে কিছু টাকা অনেক সময়ে দিতে হয়। কিছু টাকা আমি দেব বলে জানানোর পরেও ওরা ছেলেকে লক্ষ্য করে গুলি চালাল!’’ এই ঘটনার পরে স্থানীয় জগাছা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন শম্ভুনাথবাবু।
হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গত বছর শিবাজী সঙ্ঘ এলাকার এক দল দুষ্কৃতী তোলাবাজি করতে এসে এক ব্যবসায়ীকে গুলি করেছিল। তারাই জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’