Murder

পাওনার দাবিতে দম্পতিকে অস্ত্রের কোপ, গণপ্রহারে জখম অভিযুক্তও

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এলাকার বাসিন্দা, ৭৩ বছরের প্রাক্তন সেনাকর্মী চণ্ডীচরণ মণ্ডল ও তাঁর স্ত্রী, ৬৬ বছরের সুলতারানি মণ্ডলকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর সময়ে তাঁদের আর্তনাদে এলাকার লোকজন বেরিয়ে আসেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২৪ ০৬:৫৩
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

ছেলের কাছে পাওনা টাকা চাইতে এসে তাঁর বয়স্ক বাবা-মাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপানোর অভিযোগ উঠল এক যুবকের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার বেশি রাতে এই ঘটনা ঘটেছে হাওড়ার নাজিরগঞ্জ থানার পোদরার শিবতলা এলাকায়।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এলাকার বাসিন্দা, ৭৩ বছরের প্রাক্তন সেনাকর্মী চণ্ডীচরণ মণ্ডল ও তাঁর স্ত্রী, ৬৬ বছরের সুলতারানি মণ্ডলকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর সময়ে তাঁদের আর্তনাদে এলাকার লোকজন বেরিয়ে আসেন। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে মোটরবাইকে চেপে পালানোর চেষ্টা করে হামলাকারী যুবক। এলাকার বাসিন্দারা তাকে ধরতে যান। বেপরোয়া ওই যুবক তখন স্থানীয় এক যুবককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে ফের পালানোর চেষ্টা করে। তাতে বাসিন্দারা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। হামলাকারী যুবককে ধরে শুরু হয় গণপ্রহার। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাতেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ছুটে আসে বিশাল পুলিশবাহিনী। জিশু প্রামাণিক নামে ওই যুবককে জনরোষ থেকে বাঁচিয়ে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে তারা। তার অবস্থা সঙ্কটজনক। অস্ত্রের আঘাতে আহত প্রবীণ দম্পতিকেও আন্দুল রোডের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হামলাকারী যুবককে গ্রেফতার করার পরে তার বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ জিশু আচমকাই ধারালো একটি অস্ত্র নিয়ে ওই প্রাক্তন সেনাকর্মীর বাড়িতে ঢুকে পড়ে। তাঁর ছেলে সন্তু মণ্ডলের খোঁজ করে সে। সন্তুর স্ত্রী পায়েল মণ্ডল তাকে জানান, তাঁর স্বামী কাজের সূত্রে বাইরে আছেন। এর পরেই ওই যুবক হাতে ধরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে সন্তুর বাবা-মায়ের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে তাঁদের। সেই দৃশ্য দেখে সন্তুর স্ত্রী আতঙ্কে নিজের ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন এবং সন্তুকে ফোন করে ঘটনার কথা জানান। এ দিকে, আক্রান্ত দম্পতির চিৎকারে এলাকার লোকজন বেরিয়ে এলে জিশু তড়িঘড়ি বাইকে চেপে পালানোর চেষ্টা করে। স্থানীয় এক যুবক তাকে ধরার চেষ্টা করেন। তখন জিশু তাঁকেও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে বলে অভিযোগ। তখন এলাকার লোকজন আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। ওই যুবককে ধরে বেধড়ক মারধর শুরু করেন তাঁরা। ইতিমধ্যে খবর পেয়ে নাজিরগঞ্জ থানা থেকে বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে এসে জনতার হাত থেকে ওই যুবককে উদ্ধার করে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে। আক্রান্ত দম্পতি ও স্থানীয় যুবককে আন্দুল রোডের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

Advertisement

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, জিশু হাঁসখালিপোল এলাকার নতুনপল্লির বাসিন্দা। সে পেশায় কাঠের মিস্ত্রি। বছর দুয়েক আগে প্রাক্তন ওই সেনাকর্মীর দোতলা বাড়ির একতলাতেই ভাড়া থাকত জিশু। সে পেশায় কাঠের মিস্ত্রি হওয়ায় তাকে বাড়ির কিছু আসবাব তৈরি করতে দিয়েছিলেন সন্তু। কিন্তু কিছু দিন পরেই ওই বাড়ি ছেড়ে চলে যায় জিশু। আসবাবপত্র তৈরির কাজও অসম্পূর্ণ থেকে যায়। এ নিয়েই গোলমাল শুরু হয়। মাঝে মাঝেই আসবাব তৈরির বকেয়া টাকা চাইতে থাকে জিশু। সন্তু সেই টাকা না দেওয়ার ফলেই এই আক্রমণ বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।

হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘টাকাপয়সা সংক্রান্ত গোলমালকে কেন্দ্র করেই এই ঘটনা বলে মনে হচ্ছে। হামলাকারী ও আক্রান্ত, সকলকেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তার পরেই গোটা বিষয়টি পরিষ্কার হবে। অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশি হেফাজতেই রাখা হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement