সুরম্য সাঁতরা। — নিজস্ব চিত্র।
বিহারের কলেজে পড়তে গিয়ে রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হল এ রাজ্যের তরুণের। সুরম্য সাঁতরা (২১) নামে ওই তরুণ হুগলির শেওড়াফুলির জগবন্ধু মুখার্জি লেনের বাসিন্দা। শুক্রবার ভোরে পুত্রের মৃত্যুর খবর পান সুরম্যের বাবা সুশান্ত। তাঁর দাবি, কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, হস্টেলের ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর সন্তানের। ময়নাতদন্তের পর হাসপাতাল থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে সুরম্যের দেহ রাস্তায় তাঁদের হস্তান্তর করা হয়েছে বলে দাবি করেছে তাঁর পরিবার। আর এই ঘটনাতে রহস্য রয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা।
সুরম্যের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২০ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন তিনি। এর পর, গত বছর বিহারের মুজফ্ফরপুরে রাজেন্দ্রপ্রসাদ এগ্রিকালচার ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হন। সেখানে কলেজের হস্টেলে থাকতেন সুরম্য। তাঁর বাবা জানিয়েছেন, শুক্রবার ভোরে কলেজ হস্টেল থেকে ফোন পান তিনি। তাঁকে বলা হয়, রাত ৩টে নাগাদ হস্টেলের তিন তলার ছাদ থেকে পড়ে গিয়েছেন সুরম্য। তাঁকে প্রশান্ত মেমোরিয়াল চ্যারিটেবল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে সুশান্তকে জানানো হয় ফোনে। সেই ফোন পেয়ে, পূর্বা এক্সপ্রেস ধরে শুক্রবার বিকেলে সুশান্ত এবং তাঁর ভাই পৌঁছন বিহারে। কিন্তু মুজাফ্ফরপুর হাসপাতালে পৌঁছনোর আগে পটনা-কলকাতা রাজ্য সড়কে বক্তিয়ারপুর এলাকায় রাস্তার উপরেই সুরম্যের দেহ তাঁদের হস্তান্তর করা হয় বলে জানিয়েছেন সুশান্ত।
সুরম্যের আত্মীয় তিলকচন্দ্র মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘হাসপাতাল থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে মৃতদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে ময়নাতদন্তের পর। এতেই আমাদের সন্দেহ। এর মধ্যে কোনও রহস্য আছে। কিছু চাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, লোডশেডিং ছিল। তাই পাঁচ-ছয় জন ছাত্র হস্টেলের ছাদে গিয়েছিল। সেখান থেকেই কোনও ভাবে সুরম্য পড়ে যান। কিন্তু আমাদের মনে হচ্ছে, এটা নিছক দুর্ঘটনা নয়। ওকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়া হয়েছে। ঘটনার তদন্ত হোক।’’
সুরম্যের বাবার কথায়, ‘‘ঘটনাস্থলে কয়েক জন সিনিয়র ছাত্র ছিল। তাঁরা বার বার বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন এটা নিছক দুর্ঘটনা।’’ শনিবার সকালে শেওড়াফুলিতে শেষকৃত্য হয় সুরম্যের।