মঙ্গলবার চন্দননগর থেকে সাইকেলে করে রওনা দিয়েছেন আট জন সাইক্লিস্ট। নিজস্ব চিত্র।
তাঁদের বাহন সাইকেল। দু’চাকায় ভর করেই এ পার বাংলা থেকে পৌঁছে যাবেন ও পার বাংলায়। মঙ্গলবার ভালবাসার দিনে হুগলির চন্দননগর থেকে সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন ৮ জনের একটি দল। তাঁদের গন্তব্য বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। সেই উপলক্ষেই সাইকেল নিয়ে ঢাকা রওনা দিল ওই দল। তাঁদের পরনে হলুদ রঙের টি শার্ট। তাতে লেখা ‘অমর ২১শে’। সাইকেলে জায়গা পেয়েছে ভারত এবং বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা। সাইকেল নিয়ে তাঁদের এই অভিযানে দু’দেশের মৈত্রী আরও দৃঢ় হবে বলেও আশায় ওই সাইক্লিস্টরা।
বরাবরই ট্রেকিং করতে ভালবাসেন সিঙ্গুর মহামায়া স্কুলের শিক্ষক শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর স্ত্রী মহুয়া। রোজকার জীবনের ফাঁকে ফুরসত পেলেই বেরিয়ে পড়েন সাইকেল নিয়ে। তবে এ বার শুধু তাঁরা নন। তাঁদের এই সাইকেল সফরের সঙ্গী হয়েছেন আরও ৬ জন। প্রণবকুমার মাঝি, শ্রীকান্ত মণ্ডল, প্রসেনজিৎ সরকার, রমজান আলি, সত্যব্রত ভান্ডারী, অঞ্জন কুমার দাস— এই ৬ জনকে সঙ্গে নিয়েই সাইকেলে করে ঢাকা রওনা দিয়েছেন বন্দ্যোপাধ্যায় দম্পতি।
মঙ্গলবার চন্দননগর স্ট্যান্ডে ভাষা শহিদ স্মারকে শ্রদ্ধা জানিয়ে সাইকেল যাত্রা শুরু করে ওই ৮ জনের দল। প্রথম ৫ দিন সাইকেল চালিয়ে রানাঘাট, গেদে, চুঁয়াডাঙা হয়ে কুষ্টিয়া, পাবনা, কাশীনাথপুর যাবেন তাঁরা। সেখান থেকে মানিকগঞ্জ হয়ে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় পৌঁছবেন ওই সাইক্লিস্টরা। সেখানে ভাষা দিবসে যোগ দেবেন তাঁরা।
সাইকেল সফর প্রসঙ্গে শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ঢাকায় শহিদ মিনারে ভাষা শহিদদের শ্রদ্ধা জানানো এবং দুই বাংলার মানুষের সম্পর্ক আরও দৃঢ় করা, সম্প্রীতি বজায় রাখার উদ্দেশ্যে এই যাত্রা।’’ সাইক্লিস্ট দলের একমাত্র মহিলা সদস্য মহুয়া বলেন, ‘‘এত দূর সাইকেল চালিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা নিয়মিত সাইকেল চালানো অভ্যাস করেছি। গত এক মাস ধরে প্রতিদিন ২৫-৩০ কিলোমিটার করে সাইকেল চালিয়েছি। ঠিকঠাক ভাবে যদি আমরা যেতে পারি তা হলে ৬ দিনের মধ্যে আমরা ঢাকায় পৌঁছে যাব। দুই দেশের মেলবন্ধনই আমাদের উদ্দেশ্য।’’ তবে এই প্রথম বার নয়। আগেও বাংলাদেশে গিয়েছিলেন মহুয়া। তাঁর কথায়, ‘‘বাংলাদেশের মানুষের কাছ থেকে যে ভালবাসা পেয়েছি, তা ভুলতে পারিনি। তাই আবার যাচ্ছি।’’
তাঁদের এই সাইকেল সফরের সূচনা পর্বে উপস্থিত ছিলেন এভারেস্টজয়ী পিয়ালি বসাক এবং সিঙ্গুরের যুবক মিলন মাঝি, যিনি পায়ে হেঁটে কলকাতা থেকে লাদাখে গিয়েছিলেন। পিয়ালি বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে চন্দননগর থেকে সাইকেল চালিয়ে বাংলাদেশে যাচ্ছেন ৮ জন। দুই দেশের মধ্যে মৈত্রী এবং সুসম্পর্ক গড়ে তোলা তাঁদের উদ্দেশ্য। ওঁদের দলে একজন মহিলাও রয়েছেন। মহিলারাও কোনও বিষয়ে পিছিয়ে নেই। পুরুষদের সঙ্গে সমান তালে এগিয়ে যেতে পারেন তাঁরা। সমস্ত রকম অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস আমাদের দেশে অনেক এগিয়ে গিয়েছে। অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস করা ভাল। কারণ এতে শারীরিক এবং মানসিক ভাবে শক্তি পাওয়া যায়। এই অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের জন্য সরকারেরও এগিয়ে আসা উচিত।’’