মৃত আজিজুল মল্লিক ওরফে সাহেব। —ফাইল চিত্র।
গ্রামের মধ্যে দু’পক্ষের মারামারি থামাতে গিয়ে সোমবার গুরুতর জখম হয়েছিলেন এক যুবক। অভিযোগ, বাঁশ-রড দিয়ে তাঁকে পেটানো হয়েছিল। বুধবার সকালে তাঁর মৃত্যুতে তেতে ওঠে হুগলির পান্ডুয়ার সিমলাগড়-ভিটাসিন পঞ্চায়েতের পোঁটবা গ্ৰাম। জনতা চার-পাঁচটি বাড়িতে ভাঙচুর করে আগুন লাগায়। আগুন ধরানো হয় খড়ের গাদা, ধানের গোলাতেও। দমকলের দু’টি ইঞ্জিন গিয়ে আগুন নেভায়। বাহিনী নিয়ে যান হুগলি গ্রামীণের পুলিশকর্তারা।
পুলিশ জানায়, নিহত আজিজুল মল্লিক ওরফে সাহেবের (৩৮) বাড়ি ওই গ্রামেই। মারামারিতে জড়ানোর অভিযোগে আগেই পাঁচ মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আজিজুলের মৃত্যুতে তাদের বিরুদ্ধে খুনের ধারা যুক্ত হবে। আরও কয়েক জন পলাতক। ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগে কারা যুক্ত, চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, এলাকার একটি মুরগি-খামারের দুর্গন্ধ এবং মাছির উপদ্রবের অভিযোগকে ঘিরে সোমবার দুপুরে মালিকপক্ষের সঙ্গে গ্রামবাসীদের একাংশের বৈঠক বসে। অভিযোগ, বৈঠকের মাঝেই আক্রান্ত হন খামারের মালিকপক্ষের লোকেরা। দু’পক্ষের সংঘর্ষ শুরু হয়। তখন ওই জায়গা দিয়ে যাচ্ছিলেন অন্য একটি খামারের মালিক আজিজুল। অভিযোগ, গোলামল থামাতে গিয়ে তিনি আক্রান্ত হন। প্রথমে পান্ডুয়া গ্রামীণ হাসপাতাল, সেখান থেকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া সদর হাসপাতালে নেওয়া হয় তাঁকে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাতেই কলকাতার নার্সিংহোমে স্থানান্তরিত করা হয়।
পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার পান্ডুয়া থানায় জনা পনেরো গ্রামবাসীর নামে অভিযোগ দায়ের করেন আজিজুলের কাকা শেখ মহম্মদ হানিফ। তার ভিত্তিতেই এফআইআর-এ নাম থাকা পাঁচ মহিলাকে ধরা হয়। নিহতের মা আজমিরা মল্লিক বলেন, “ছেলে ওদের ঝগড়ায় ছিল না। কারও সঙ্গে ওর শত্রুতাও ছিল না। ওকে যারা মেরেছে, তারা যেন চরম শাস্তি পায়, প্রশাসনের কাছে এটাই চাইব।”
শেখ মহম্মদ আলি নামে এক গ্রামবাসী বলেন, “ঘটনাস্থলে আমিও ছিলাম। হঠাৎই একটা কথা নিয়ে বচসা শুরু হয়। তার পর বঁটি, কাটারি নিয়ে মারামারি শুরু হয়ে যায়। আমাকেও মারে। আজিজুল ছাড়াতে গিয়েছিলেন। ওঁকেও প্রচণ্ড মারধর করা হয়।”