প্রতীকী ছবি।
দশমীর রাতে উত্তরপাড়ার মাখলায় তৃণমূলের দু’পক্ষের মধ্যে গোলমালে প্রহৃত এক যুবকের মৃত্যু হল। বুধবার সকালে রোহিতরঞ্জন ঝাঁ (২৮) নামে ওই যুবক কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান। ওই খবর ছড়াতেই এলাকায় শোরগোল পড়ে। উত্তেজনা ছড়ায়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে। বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। প্রহৃত এবং হামলাকারী— উভয় পক্ষই উত্তরপাড়ার উপ-পুরপ্রধান খোকন মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। সেই কারণেই বিষয়টি ধামাচাপা দিতে পুলিশ অভিযুক্তদের ধরছে না বলে বিরোধীদের অভিযোগ। দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে এ দিন সিপিএমের তরফে উত্তরপাড়া থানায় স্মারকলিপি দেওয়া হয়। পুলিশ কমিশনার অমিত পি জাভালগি জানান, অভিযুক্ত প্রত্যেককে গ্রেফতার করা হবে।
পুরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ডের মাখলা এলাকায় দশমীর রাতে দু’দল তৃণমূল সমর্থকদের মধ্যে বিবাদ বাধে। তা থেকে মারামারি। অভিযোগ, রোহিতকে ৪-৫ জন মিলে বেধড়ক মারধর করে। আরও দুই যুবক মার খান। রোহিতের আঘাত গুরুতর ছিল। পুলিশ তাঁকে উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় কলকাতায় বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়।
বাড়ির লোকেরা জানান, হাসপাতালে শুয়ে হামলাকারীদের নাম জানান রোহিত। তাঁর মামা মোহনকুমার ঠাকুর উত্তরপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সিপিএমের উত্তরপাড়া-মাখলা এরিয়া কমিটির সদস্য সলিল দত্তের অভিযোগ, ‘‘মাখলা অপরাধীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। উপ-পুরপ্রধানের দলবল ওই ঘটনা ঘটিয়েছে। ওই যুবককে মারধরে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার না করলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামব।’’ একই সুরে বিজেপির শ্র্রীরামপুর সাংগঠিনক জেলা সম্পাদক ইন্দ্রনীল দত্ত বলেন, ‘‘রাজ্যের বহু জায়গাতেই এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। অপরাধীরা উপ-পুরপ্রধানের ঘনিষ্ঠ বলে পুলিশ ধরছে না।’’
বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে দিচ্ছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। পুরপ্রধান তথা তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘কেউ যদি অপরাধ করে, তার জন্য পুলিশ আছে। কে কার ঘনিষ্ঠ, সেটা বিষয় নয়। দোষ করলে আইনত যা হওয়ার, হবে। বিজেপি বা সিপিএমের কোনও বক্তব্য থাকলে, পুলিশকে জানাক।’’ উপ-পুরপ্রধান খোকন মণ্ডল বলেন, ‘‘যিনি মার খেয়েছেন, আর যারা মেরেছে, সবাই আমার পরিচিত। ওদের নিজেদের মধ্যে কোনও সমস্যা হলে আমাদের জানাতে পারত। মারধর করা অন্যায়। আমার কাউকে আড়াল করার কিছু নেই। যাঁরা বলছেন, তাঁরা ভুল করছেন। ওই রাতে মারপিটের খবর পেয়ে আমি নিজে পুলিশকে জানাই। পুলিশকে বলেছি, অবিলম্বে অপরাধীদের ধরতে হবে।’’