নিজস্ব চিত্র
ফের সিবিআই অফিসার সেজে প্রতারণার অভিযোগ। অভিযোগ, হাওড়ার চড়কডাঙার বাসিন্দা শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে সিবিআই অফিসার পরিচয় দিয়ে ভুয়ো কারবার চালাচ্ছেন। মে মাসে তাঁর বিরুদ্ধে তাঁর স্ত্রী অভিযোগ করেন। সেই অভিযোগের সূত্র ধরে পুরো বিষয়টি জানতে পারে পুলিশ।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, শুভদীপ বেঙ্গালুরু থেকে বি টেক করেছেন। তাঁর বাড়ির লোকজনের বক্তব্য, তাঁরা জানতেন যে বি টেক করার পর বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তিনি। তবে এর মধ্যেই তাঁর সঙ্গে বিহারের বাসিন্দা লালন নামে এক ব্যক্তির আলাপ হয়। তারপর থেকে আন্তরাজ্য প্রতারণা চক্রের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যান শুভদীপ। কেন্দ্রীয় সরকারে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে তিনি বিভিন্ন রাজ্যের বহু মানুষকে প্রতারণা করেছেন বলে অভিযোগ। সংবাদ মাধ্যমে শুভদীপ ফোন মারফত স্বীকার করেছেন, তিনি কেন্দ্রীয় সরকারে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে করে বিভিন্ন মানুষের থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আদায় করেছেন।
গত বছর একই পাড়ার বাসিন্দা নয়না ঘোষাল নামে এক মহিলার সঙ্গে বিয়ে হয় শুভদীপের। সিবিআই-এর অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর পদে রয়েছেন বলে তখন তিনি দাবি করেন। নীলবাতি লাগানো গাড়ি নিয়ে ঘোরাফেরা শুরু হয়। তাঁর স্ত্রী জানিয়েছেন, ঘুণাক্ষরেও তিনি প্রথমে বুঝতে পারেননি তাঁর স্বামী একজন জালিয়াত। জাল আই কার্ড-সহ বিভিন্ন নকল কাগজপত্র ব্যবহার করতেন শুভদীপ। বিয়ের কিছুদিনের মধ্যেই বিচ্ছেদ হয় শুভদীপের। কারণ স্ত্রী জানতে পেরে যান সবটা। কেন্দ্রীয় অফিসার সেজে শুভদীপ বাড়ি থেকে বিভিন্ন ইন্টারভিউ নেওয়ার কাজ করতেন, সেই সূত্রেই সত্যিটা জানতে পারেন স্ত্রী।
কয়েক মাস আগে বিবাহবিচ্ছেদ হয় তাঁদের। জগাছা থানায় তাঁর স্ত্রী লিখিত অভিযোগ জানান। কিন্তু জগাছা থানার পুলিশ সে ভাবে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ। শুভদীপের বাবা রাজকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় অবসরপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সরকারী কর্মী। তিনি জানান, ছেলে টাকা আদায়ের জন্য তাঁর উপরেও নির্যাতন করতেন। অবসরের পর পাওয়া সব টাকা জোর নিয়ে নিয়েছিলেন তাঁর ছেলে।
পরিবার সূত্রে খবর, শুভদীপ এখন কলকাতায় নেই। দিল্লিতে রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। পরিবারকে শুভদীপ জানিয়েছেন, তিনি ভুল করেছেন। হাওড়া আদালতে তিনি আত্মসমর্পণ করতে চান। শুভদীপের মা জানিয়েছেন, যে ভাবে প্রতারণা করেছে তাঁর ছেলে তা মেনে নেওয়া যায় না।