—প্রতীকী চিত্র।
‘জামতাড়া’ বলে পরিচিত বিহারের শেখপুরা জেলার পাঞ্চি গ্রামে বসে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে এ রাজ্যে অনলাইন প্রতারণা চালাচ্ছিল একটি চক্র। তার ফাঁদে পড়ে একটি বহুজাতিক ফাস্ট ফুড সরবরাহকারী সংস্থার নামে ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি নিতে গিয়ে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা খুইয়েছিলেন এক ব্যক্তি। সেই প্রতারণা মামলার তদন্তে নেমে হাওড়ার জগাছা থানার পুলিশ পাঞ্চি থেকে গ্রেফতার করল ওই চক্রের ছ’জনকে।
বুধবার ধৃতদের হাওড়া আদালতে তোলা হলে তাদের আট দিনের পুলিশি হেফাজত দেন বিচারক। ধৃতদের নাম দিলখুশ কুমার, উপেশ কুমার, নীতীশ কুমার, বিকাশকুমার যাদব, দীপক কুমার এবং শিশুপাল কুমার। এদের মধ্যে শিশুপালের বয়স ২৯। বাকিদের বয়স ১৯ থেকে ২১ বছরের মধ্যে। ধৃতদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার করা হয়েছে একাধিক মোবাইল ফোন এবং একটি এসইউভি।
পুলিশ জানিয়েছে, সম্প্রতি কলকাতার একটি বহুজাতিক ফাস্ট ফুড সরবরাহকারী সংস্থার নামে ভুয়ো বিজ্ঞাপন দেখে ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি নেওয়ার জন্য আবেদন করেন জগাছা থানার বাসিন্দা এক ব্যক্তি। এর জন্য তিনি ধাপে ধাপে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা জমা দেন। পরে ওই ব্যক্তি বুঝতে পারেন, তিনি প্রতারিত হয়েছেন। কারণ, যে ফোন নম্বরে এত দিন তিনি যোগাযোগ করছিলেন, সেটি তখন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এর পরেই জগাছা থানায় প্রতারণার মামলা দায়ের করেন তিনি।
হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, তদন্তে নেমে দুষ্কৃতীদের মোবাইল নম্বরের টাওয়ারের অবস্থান দেখে বোঝা যায়, গোটা কারবার পরিচালিত হয়েছে বিহার এবং উত্তরপ্রদেশ থেকে। সেই অনুযায়ী জগাছা থানার পুলিশের একটি দল পটনা রওনা দেয়। কিন্তু দুষ্কৃতীদের মোবাইলের অবস্থান ক্রমশ বদলাতে থাকায় পুলিশের দলটি অন্য দিকে গিয়েও পৌঁছে যায় শেখপুরা জেলায়।
সেখান থেকে স্থানীয় পুলিশের সাহায্যে ওই জেলারই পাঞ্চি গ্রামে গিয়ে তদন্তকারীরা জানতে
পারেন, জামতাড়ার মতোই ওই গ্রামের ঘরে ঘরে অনলাইন প্রতারণা-চক্র সক্রিয়। এটাই ওই গ্রামের মূল অর্থনীতি। গ্রামে ঢুকতে গেলে এক জন ফেরিওয়ালাকেও তল্লাশির মুখে পড়তে হয়।
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জগাছা থানার দলটি গ্রামে ঢুকে স্থানীয় বাসিন্দা সেজে প্রথমে দুষ্কৃতীদের বাড়িগুলি চিহ্নিত করে আসে। রাতের দিকে ওই বাড়িগুলিতে হানা দিয়ে ছ’জনকে গ্রেফতার করা হয়। যে মোবাইলগুলি দিয়ে কোম্পানির ম্যানেজার বা ব্যাঙ্ক অফিসার সেজে প্রতারণা চালাচ্ছিল অভিযুক্তেরা, তেমন আটটি মোবাইল উদ্ধার হয়েছে।