—প্রতীকী চিত্র।
গঙ্গার ফেরিঘাটগুলির আধুনিকীকরণের কাজ শুরু হয়েছে। বিশ্বব্যাঙ্ক এবং রাজ্যের দেওয়া প্রায় ১০০০ কোটি টাকায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার নুরপুর থেকে নদিয়ার কল্যাণী পর্যন্ত ১৪০টি জেটিঘাট সংস্কার করা হবে। পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী জানান, ২৯টির কাজ অনেকটা হয়ে গিয়েছে। ২২টি ভেসেল দেওয়া হয়েছে। আরও ভেসেল দেওয়া হবে। স্নেহাশিস জানান, বিশ্বব্যাঙ্ক এ জন্য ৭০০ কোটি টাকা দিয়েছে, রাজ্য দিয়েছে আরও ৩০০ কোটি টাকা।
প্রশাসনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, হুগলি জেলায় ৬টি জেটিঘাটের ভোল বদলে যাবে দ্রুত। জলপথ পরিবহণ দফতর গঙ্গায় সেতুর উপরে চাপ কমাতে পণ্যবাহী গাড়ি পারাপারের ক্ষেত্রেও জলপথকে বেশি করে ব্যবহারের চিন্তাভাবনা করছে। পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, হুগলির জেলা সদর চুঁচুড়া ফেরিঘাট হবে টার্মিনাল জেটি। সেখানে স্মার্ট গেট, ক্যাফেটেরিয়া-সহ আধুনিক সুযোগ-সুবিধা মিলবে। স্নেহাশিস জানান, পরে যে সব ভেসেল দেওয়া হবে, সেগুলি ব্যাটারিতে চালানোর ব্যবস্থা থাকবে। সে জন্য ভেসেলে ইলেকট্রনিক চার্জিং (ই-চার্জিং) ব্যবস্থা থাকবে। গঙ্গাপাড়ে চার্জিং স্টেশন তৈরি হবে।
সম্প্রতি দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি ও নদিয়ার পুরপ্রধানদের নিয়ে কলকাতায় বৈঠক করেন পরিবহণমন্ত্রী। পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও ছিলেন। পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, হুগলির কোন্নগর, বল্লভপুর, চাঁপদানি, গৌরহাটি, বাঁশবেড়িয়া জেটিঘাট ওই প্রকল্পের আওতায় রয়েছে। প্রতিটি ঘাটে খরচ হবে ৮-৯ কোটি টাকা। চুঁচুড়া জেটিঘাটকে যেহেতু টার্মিনাল ঘাট হিসেবে তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে, সেখানে ব্যয় ৪০ কোটি টাকা পর্যন্ত হতে পারে। যে সমস্ত ঘাট নতুন কলেবরে সাজছে, সেখানকার পুরপ্রধানদের
অনুরোধ করা হয়েছে, জেটির ৫০০ মিটার পর্যন্ত গাছ দিয়ে সৌন্দর্যায়নের ব্যবস্থা করতে।
স্নেহাশিস জানান, জেটিতে আধুনিক ব্যবস্থার পাশাপাশি দ্বিতীয় হুগলি সেতু, নিবেদিতা সেতু এবং ত্রিবেণীর ঈশ্বরগুপ্ত সেতুতে যানের ভার কমাতে বিশেষ পরিকল্পনা করা হয়েছে। গঙ্গায় ওই তিনটি সেতুর পাশে যেখানে অ্যাপ্রোচ রোডের সুবিধা আছে, সেখানে ভেসেলে ট্রাক পারাপারের চিন্তাভাবনা চলছে। ঈশ্বরগুপ্ত সেতু অনেক দিন ধরে দুর্বল। সেখানে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ। যদিও হুগলির সঙ্গে উত্তর ২৪ পরগনা ও নদিয়া জেলার যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম এই সেতু। পরিবহণমন্ত্রী বলেন, ‘‘ঈশ্বরগুপ্ত সেতুর ভার কমাতে ত্রিবেণীতে গঙ্গায় ভেসেলে ট্রাক পারাপারের পরিকল্পনা রয়েছে। ট্রাক যাতায়াতে সেখানে প্রয়োজনীয় অ্যাপ্রোচ রোড তৈরির সম্ভাবনা আছে কি না, খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে বাঁশবেড়িয়ার পুরপ্রধানকে।’’
বাঁশবেড়িয়ার পুরপ্রধান আদিত্য নিয়োগীর বক্তব্য, দিনের ব্যস্ত সময় ছাড়া শিবপুর মেন রোডকেই ওই কাজে ব্যবহার করা যায়। পার্কিংয়ের জায়গা পেতেও বিশেষ সমস্যা হবে না। অদূরেই মগরা হয়ে অসম লিঙ্ক ধরতে পারবে ট্রাক। তাতে হুগলি এবং কল্যাণী ও উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যে পণ্য পরিবহণে যে সমস্যা রয়েছে, তা দূর হবে। তবে শিবপুর মেন রোডের পরিসর কম হওয়ায় দশ চাকার ট্রাক চলতে পারবে। তার থেকে বড় গাড়ি বা ট্রেলার যেতে পারবে না।