হাওড়ার পাঁচলায় উদ্ধার হওয়া সেই লক্ষ লক্ষ টাকা। ফাইল চিত্র।
হাওড়ায় টাকা উদ্ধার মামলায় অভিযুক্ত ঝাড়খণ্ডের তিন বিধায়ককে অন্তর্বর্তিকালীন জামিন দিল কলকাতা হাই কোর্ট, তবে তিনটি শর্তে। হাই কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, জামিন পেলেও বিধায়কেরা ঝাড়খণ্ডে ফিরতে পারবেন না। এমনকি, কলকাতার বাইরেও বেরোতে পারবেন না তাঁরা। বুধবার তিন বিধায়কের জামিনের আবেদনের শুনানি ছিল কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি এবং বিচারপতি অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে। শুনানি শেষে টাকা উদ্ধার মামলায় অভিযুক্ত তিন বিধায়ক, এক ব্যবসায়ী এবং গাড়ির চালককে অন্তর্বর্তিকালীন জামিন দিয়েছে আদালত।
ঝাড়খণ্ডের তিন কংগ্রেস বিধায়কের কাছে হাওড়ার পাঁচলার কাছে জুলাই মাসেই ৫০ লক্ষ টাকা উদ্ধার করেছিল রাজ্য পুলিশ। বুধবার বিধায়কদের আইনজীবী রাজদীপ মজুমদার জানিয়েছেন, ‘থ্রি ফোল্ড গ্রাউন্ডে’ দেওয়া হয়েছে ওই জামিন। অর্থাৎ তিনটি যুক্তিতে বিধায়কদের জামিনের আবেদন মঞ্জুর হয়েছে— এক, গত ৩০ জুলাই তিন বিধায়ককে আটক করার পর তাঁদের বিরুদ্ধে ঝাড়খণ্ডে এফআইআর দায়ের হয় ৩১ জুলাই। পরে সেই এফআইআর পশ্চিমবঙ্গের পাঁচলায় স্থানান্তরিত হলেও এফআইআর দায়ের করতে দেরির কারণ জানাতে পারেনি পুলিশ। আদালতের প্রশ্ন ছিল এফআইআর দায়েরে দেরি কেন? কেন এফআইআর দায়ের না হতেও আটক করে রাখা হল বিধায়কদের? দুই, অভিযুক্ত তিন বিধায়কের বিরুদ্ধে ঝাড়খণ্ডেরই আর এক বিধায়ক যে সরকার ফেলার জন্য টাকা নেওয়ার অভিযোগ এনেছিলেন, তার কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। রাজ্যের গোয়েন্দা শাখা সিআইডি ওই অভিযোগকারী ঝাড়খণ্ডের বিধায়কের সঙ্গো কথোপকথনের কোনও প্রমাণ দেখাতে পারেননি। তাঁর সঙ্গে সিআইডির কথোপকথনের কোনও কলরেকর্ড বা হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটও দেখাতে পারেননি আদালতে। তিন, অভিযুক্তরা বিধায়ক। এঁরা কোথাও পালিয়েও যাবেন না। মূলত এই মর্মেই অন্তর্বর্তিকালীন জামিন দেওয়া হয়েছে তিন বিধায়ককে।
তবে জামিন দেওয়ার পাশাপাশি কিছু শর্তও আরোপ করেছে আদালত। বিচারপতিদ্বয় জানিয়েছেন, প্রথমত, এই বিধায়কেরা জামিন পেলেও ঝাড়খণ্ডে ফিরতে পারবেন না। তাঁদের থাকতে হবে কলকাতাতেই। দ্বিতীয়ত, তাঁদের পাসপোর্ট জমা দিতে হবে লোয়ার কোর্টে। তৃতীয়ত, সপ্তাহে এক দিন দেখা করতে হবে তদন্তকারী অফিসারের সঙ্গে। বুধবার আদালত এই তিন শর্তে বিধায়কদের জামিন দিয়ে জানিয়েছে, আগামী ১০ নভেম্বর এই মামলায় পরবর্তী শুনানি হবে।