ঝকঝকে: মিলল আবাসন। হলদিবড়িতে। নিজস্ব চিত্র1
দিনহাটা পারেনি, হলদিবাড়ি পেরেছে। কী ভাবে এই ‘অসাধ্যসাধন’ হল, সেই প্রশ্নই এখন ঘুরছে সাধারণ মানুষের মুখে মুখে।
কী পেরেছে হলদিবাড়ি? ২০১৫ সালে ছিটমহল হস্তান্তরের পরে যে পরিবারগুলি হলদিবাড়ি সাবেক ছিটমহল সেটেলমেন্টের ক্যাম্পে এসে ওঠে, তাদের হাতের আবাসনের চাবি তুলে দিল প্রশাসন। শুধু ঝকঝকে বাড়ি করে দেওয়াই নয়, নতুন আবাসনটির দরজা পার হয়ে ঢুকলে পিচের রাস্তা, জলের ট্যাঙ্ক, মাঝে প্রশস্ত খোলা এলাকা। সব মিলিয়ে, হাসি ফুটেছে ওঁদের মুখে। ২৭ জানুয়ারি ওদের সবাইকে স্থায়ী শিবিরে স্থানান্তরিত করা হয়। এর কিছু দিন আগেই, রাসমেলার সময়েই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কয়েক জনের হাতে ফ্ল্যাটের চাবি তুলে দিয়েছিলেন।
২০১৫ সালে বাংলাদেশের ভূখণ্ড দিয়ে ঘেরা ভারতীয় সাবেক ছিটমহল থেকে একাধিক পরিবার ভারতের মূল ভূখণ্ডে প্রবেশ করে। তাদের মধ্যে ৯৬টি পরিবারের বাসস্থান হয় হলদিবাড়ির কৃষি ফার্মের অস্থায়ী শিবির। সরকারের তরফে বিভিন্ন রকম বাড়তি সুযোগ সুবিধা তাঁদের দেওয়া হয়। স্থানীদের দাবি ছিল, তার পরেও স্থায়ী মাথা গোঁজার ঠাঁই না হওয়ায় সমস্যা ছিলই। তাঁদের কথায়, অস্থায়ী শিবিরের টিনের ঘরে থাকা খুবই কষ্টকর। গরমের দিনে ভিতরে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়ত। আবার শীতের রাতে টিন চুঁইয়ে পড়ত কুয়াশা। এখন এই বাসিন্দারাই খুশি স্থায়ী বাসস্থান পেয়ে। যাঁরা কাজ না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছিলেন, তাঁদের অনেকেরই হাতের কাজের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দেয় জেলা প্রশাসন। এর পরে আসে তাঁদের জাতিগত শংসাপত্র। ১০০দিনের কাজ, গতিধারা প্রকল্প, উৎকর্ষ বাংলা— সবেরই সুবিধা দেওয়া হয়।
কিন্তু কী ভাবে এই অসাধ্যসাধন হল? প্রশাসনিক সূত্র বলছে, পুরো বিষয়টিতে জেলা প্রশাসন টিম গড়ে কাজ করেছে। প্রশাসনের কেউ কেউ বলছেন, সময় অনেকটাই চলে গিয়েছিল— এটা ঠিকই। তবে যাতে আর সময় নষ্ট না হয়, সে দিকে নজর দিয়ে কাজ শুরু করা হয়েছিল।
হলদিবাড়ির বিডিও সঞ্জয় পণ্ডিতের কথা থেকেও সেটাই ধরা পড়েছে। সঞ্জয় পণ্ডিত বলেন, ‘‘এই কাজ করতে জেলা প্রশাসন সর্বক্ষণ আমাদের পাশে ছিল। জেলাশাসকের নির্দেশ মেনেই আমরা ‘টিমওয়ার্ক’ করে ওই কাজ করতে সমর্থ হয়েছি।” বিধায়ক অর্ঘ্য রায়প্রধান বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগেই দীর্ঘসময়ের যন্ত্রণার কাটে ওদের।’’ আর স্থানীয় বাসিন্দা হরি, জয়প্রকাশরা বলেন, ‘‘এ ভাবেই সরকারকে পাশে চাই।’’