‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ড নিয়ে হাসপাতালগুলিকে হুঁশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ছবি পিটিআই।
‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ড থাকা রোগীকে ফেরালে লাইসেন্স নিয়ে সমস্যা হতে পারে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের। দুর্গাপুরের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে বৃহস্পতিবার হুঁশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তেমন পরিস্থিতি তৈরি হলে সংশ্লিষ্ট রোগীকে থানায় অভিযোগ জানানোর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘যদি কেউ পরিষেবা না দেন, তা হলে লাইসেন্স নিয়ে সমস্যা হবে। সরকারের কাছে লাইসেন্স নিয়ে হাসপাতাল চলে। কড়া পদক্ষেপ, জরিমানা করা হবে। লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ করা হবে কি না, তা ভেবে দেখা হবে।’’
রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলি ছাড়াও ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্পের অধীনে রয়েছে প্রায় দেড় হাজার বেসরকারি হাসপাতাল। ২০১৯-এর ফেব্রুয়ারিতে মুখ্যমন্ত্রী ‘স্বাস্থ্যসাথী’ স্মার্ট কার্ড চালু করার কথা ঘোষণা করেন। অথচ, গত বছর অক্টোবরে এই কার্ড থাকা এক রোগীকে ভর্তি না নেওয়ার অভিযোগ ওঠে দুর্গাপুরের গাঁধী মোড়ের এক বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। যদিও ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, উপযুক্ত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই জানানোয় রোগীকে নিয়ে ফিরে গিয়েছিলেন পরিজনেরাই। সে বছরই এই প্রকল্পে এক রোগীকে ভর্তি করিয়ে বিল নিয়ে বিপাকে ফেলার অভিযোগ ওঠে দুর্গাপুরের শোভাপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, রোগীর অবস্থার বিশদ তথ্য পাঠানো হয়েছিল ‘স্বাস্থ্যসাথী’ দফতরে। কিন্তু প্রকল্পের আওতায় টাকা দেওয়ার আবেদন মঞ্জুর হয়নি।
আরও পড়ুন: শিল্প সংস্থায় কাজ বন্ধ নয়, নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর
রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব বিবেক কুমার জানান, এখনও পর্যন্ত ‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ড থাকা রোগীদের ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ৩,২৫০টি। মুখ্যমন্ত্রী জেলাশাসকদের বেসরকারি হাসপাতালগুলির সঙ্গে চার-পাঁচ মাস অন্তর এমন অভিযোগগুলি নিয়ে বৈঠকের নির্দেশ দেন। তিনি আরও বলেন, ‘‘হাসপাতাল তো বিনা পয়সায় চিকিৎসা করছে না। হাসপাতাল চালাতে গেলে মানবিক হতেই হবে। আগে দুঃস্থদের চিকিৎসার জন্য ‘কোটা’ ছিল। এখন সে সব উঠে গিয়েছে। তার উপরে ‘স্বাস্থ্যসাথী’র রোগীদের ফেরানোর অভিযোগ উঠছে। কারও ঔদ্ধত্য মানা হবে না।’’
আরও পড়ুন: রেশন কার্ড দিতে দেরি, সচিবকে ধমক মুখ্যমন্ত্রীর
‘অ্যাসোসিয়েশন অব হসপিটালস ইন ইস্টার্ন ইন্ডিয়া’র সহ-সভাপতি রূপক বড়ুয়ার অবশ্য দাবি, ‘‘রোগী ফেরত পাঠানোর প্রশ্নই নেই। কেবল শয্যা না থাকলে ফেরানো হয়ে থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রেও জরুরি বিভাগের রোগীর অবস্থা স্থিতিশীল করে তবেই অন্যত্র পাঠানো হয়।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘প্রকল্পটি খুব ভাল। তবে বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে বিভিন্ন পরিষেবার জন্য যে অর্থ নির্দিষ্ট করা হয়েছে, তা পুনর্বিবেচনা করা হলে এটি আরও জনপ্রিয় হবে।’’
তথ্য সহায়তা: সৌরভ দত্ত