বৈঁচি দাসপুর গ্রামে চলছে পুজো। নিজস্ব চিত্র।
জগদ্ধাত্রী পুজোর দশমীর দিন, হুগলির বৈঁচি দাসপুর গ্রামে মহাদেব-জগদ্ধাত্রীর বিয়ে হয়। এই পুজোর অন্যতম আকর্ষণ মহাদেব-জগদ্ধাত্রীর বিয়ে। দশমীর দিন মহাদেবকে কাঁধে নিয়ে গোটা গ্রাম ঘোরেন ভক্তরা। তাঁরা হন বরযাত্রী। আর দেবীর সঙ্গে যাঁরা থাকেন, তাঁরা কনে পক্ষ। রাতেই ধুমধাম করে বিয়ে সম্পন্ন হয়।
বৈঁচি চৌধুরী পরিবারের মতে, ১৩১৮ সালে হরিদাসী চৌধুরী এই পুজোর সূচনা করেন। কিন্তু ১৩৪২ সালে মন্বন্তরের সময় পুজো করার সামর্থ্য ছিল না চৌধুরীদের। কথিত আছে, সে বছর বর্ধমানের রাজা বিজয় চাঁদের ছেলে তেজচন্দ্র বর্মনের দেবত্র সম্পত্তিতে জগদ্ধাত্রীকে বসিয়ে দিয়ে আসেন চৌধুরীরা। তারপর থেকেই সর্বজনীন হয়ে যায় সেই পুজো। দাসপুর গ্রামে আজও পুজো হয়ে আসছে।
আগে নবমীতে ছাগল ও মোষ বলি হত। করোনার কারণে বলির রীতিতে ছেদ পড়েছে। তাই আঁখ ও ছাঁচি কুমড়োর প্রতীকি বলি হয়। শোনা যায়, এক সময় তামিলনাড়ুর জাল্লিকাট্টুর মত মোষের খেলাও হত দাসপুর গ্রামে। একবার খেলা দেখাতে গিয়ে আহত হন একজন। তারপর থেকে মোষের খেলা বন্ধ হয়ে মোষ বলির প্রথা চালু হয়। আগে মন্দির ছিল তালপাতার, এখন পাকা দালানের উপর টিনের ছাউনি। চৌধুরী পরিবারের অন্যতম সদস্য আনন্দমোহন চৌধুরী বলেন, ‘‘সব জায়গায় হর পার্বতীর বিয়ের রীতি আছে। আমাদের গ্রামে হর-জগদ্ধাত্রীর বিয়ে হয়। নবমীতে জগদ্ধাত্রী পুজো হয়। মহাদেব থাকেন চৌধুরী বাড়িতে। তাঁকে গ্রাম ঘুরিয়ে মন্ডপে আনা হয়। তার পর শুরু হয় বিয়ের অনুষ্ঠান। বিয়ে মিটলে রাতে খাওয়া দাওয়া। গোটা এলাকার মানুষ এই পুজোয় অংশ নেন।’’