Coronavirus

Social Distancing: বিধি মানার পরীক্ষায় পাশ ফর্ম পূরণ পর্ব

সদিচ্ছা থাকলে যে উপায় হয়, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের স্কুলে বৃহস্পতিবার উচ্চ মাধ্যমিকের ফর্ম পূরণের প্রথম দিনে সেটা উজ্জ্বল হয়ে উঠল।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২২ ০৬:০০
Share:

প্রতীকী ছবি।

সদিচ্ছা থাকলে যে উপায় হয়, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের স্কুলে বৃহস্পতিবার উচ্চ মাধ্যমিকের ফর্ম পূরণের প্রথম দিনে সেটা উজ্জ্বল হয়ে উঠল। বেশির ভাগ জায়গায় ‘স্লট’ ভাগ করে, সংখ্যা বেঁধে দিয়ে এবং কিছু ক্ষেত্রে সেকশন ধরে পরীক্ষার্থীদের স্কুলে আনিয়ে ফর্ম পূরণের কাজ করানোয় কোভিড বিধি লঙ্ঘনের বড় অভিযোগ ওঠেনি। কালো দাগ যে একেবারেই নেই, তা নয়। কিন্তু সেই দাগ ফর্ম পূরণে শৃঙ্খলার ঔজ্জ্বল্য ঢাকতে পারেনি।

Advertisement

মাধ্যমিকের ফর্ম পূরণের কাজ শেষ হতে চললেও কিছু এখনও বাকি। উচ্চ মাধ্যমিকের ফর্ম পূরণ শুরু হল এ দিনেই। তার উপরে চলছে পড়ুয়াদের টিকাকরণ। আছে মিড-ডে মিলের সামগ্রী বিলির কাজও। ফলে স্কুলে ভিড়ের সম্ভাবনা ছিলই। তবে বেশির ভাগ স্কুল-কর্তৃপক্ষের দক্ষ পরিচালনায় বিধিভাঙা ভিড় জমেনি। মিত্র ইনস্টিটিউশনের ভবানীপুর শাখার প্রধান শিক্ষক রাজা দে বলেন, ‘‘এমনিতে স্কুলে বেশ ভিড়। কোভিড টিকাকরণ চলছে। ভিড় যাতে মাত্রা না-ছাড়ায়, তাই ফর্ম পূরণের জন্য হোয়াটসঅ্যাপে ছেলেদের স্লট বুক করে আসতে বলা হয়েছে। ১০ থেকে ১২ জনের বেশি এক বারে স্কুল-চত্বরে ঢুকতেই দেওয়া হচ্ছে না।’’ আগেই উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ জানিয়ে দিয়েছিল, একসঙ্গে ১০ জনের বেশি পড়ুয়াকে ফর্ম পূরণের জন্য স্কুলে ঢুকতে দেওয়া যাবে না।

বেলতলা গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা অজন্তা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মাধ্যমিকের ফর্ম পূরণ আগে শুরু হওয়ায় সেটা প্রায় শেষের পথে। উচ্চ মাধ্যমিকের ফর্ম পূরণের কাজ অনেকটাই এগিয়েছে। কাজ হচ্ছে করোনা বিধি মেনেই।’’ মেট্রোপলিটন মেন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক প্রণব বড়ুয়া জানান, ‘স্লট’ বুক করে পড়ুয়াদের আসতে বলা হয়েছিল। এ দিন সে-ভাবেই কাজ হয়েছে। হবে শুক্রবারেও। হোয়াটসঅ্যাপে স্লট বুক করে আসতে বলা হয়েছে পড়ুয়াদের।

Advertisement

বিভিন্ন জেলার স্কুলও নিজেদের মতো করে বিধি মেনে ফর্ম পূরণের চেষ্টা চালিয়েছে। কোনও স্কুলে পড়ুয়াদের ভাগ করে আলাদা ঘরে বসানো হয়েছে। আবার কোনও স্কুল সময় নির্দিষ্ট করে দিয়ে ছোট ছোট দলে ছাত্রছাত্রীদের ভাগ করে আসতে বলেছে। কিছু স্কুলে ফর্ম পূরণ আর টিকাকরণের কাজ চলেছে একসঙ্গে।

বর্ধমান রথতলা মনোহর দাস বিদ্যা নিকেতনের প্রধান শিক্ষক বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কৃষ্ণপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৌমেন কোনার বলেন, ‘‘সারা দিন স্কুল খোলা থাকছে। দু’জন-চার জন করে পড়ুয়া আসছে। কোনও ভাবেই স্কুল-চত্বরে ভিড় করতে দেওয়া হচ্ছে না। কোভিড বিধি মেনেই সব কাজ করা হচ্ছে।’’ দুর্গাপুর প্রজেক্টস টাউনশিপ গার্লস হাইস্কুলে এ দিন ৪৭ জনের মধ্যে সাত জন ফর্ম পূরণ করেছে। প্রত্যেকেই মাস্ক পরে এসেছিল। স্কুলের তরফে হাতশুদ্ধিও দেওয়া হয় পড়ুয়াদের।

করোনা বিধি মেনে ফর্ম পূরণ হয়েছে নদিয়া, দুই মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামেও। ভিড় এড়াতে একাধিক সারি করা হচ্ছে। মালদহের বিভিন্ন স্কুলে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক ফর্ম পূরণ চলছে সেকশন ধরে। ফলে প্রতিদিনই স্কুলে কিছু পড়ুয়া হাজির থাকলেও তেমন ভিড় হচ্ছে না। বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ায় সময় ভাগ করে পড়ুয়াদের ডেকে উচ্চ মাধ্যমিকের ফর্ম পূরণের ব্যবস্থা করেছে বিভিন্ন স্কুল। কিন্তু অনেক জায়গাতেই ফর্ম পূরণ করে বেরিয়ে পড়ুয়াদের করোনা বিধি মানতে দেখা যায়নি।

ভিড় দেখা গিয়েছে শিলিগুড়ির বিভিন্ন স্কুলে। মুখে মাস্ক ছিল, কিন্তু দূরত্ব-বিধি উধাও। জলপাইগুড়ির কালিয়াগঞ্জ উত্তমেশ্বর স্কুলে নবম ও দশম শ্রেণির ভর্তি চলাকালীন শতাধিক পড়ুয়ার ভিড়ে দূরত্ব-বিধি লাটে ওঠে। মুর্শিদাবাদেও বিধিভঙ্গের কিছু ঘটনা ঘটেছে। কোথাও পড়ুয়ারা মাস্ক পরে এলেও বিদ‍্যালয়ে তাদের জন‍্য স‍্যানিটাইজ়ারের ব‍্যবস্থা ছিল না। কোথাও ব‍্যবস্থা থাকলেও পড়ুয়ারা তা ব‍্যবহারে অনীহা দেখিয়েছে।

শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশের বক্তব্য, স্কুলে টিকাকরণ কর্মসূচির পাশাপাশি মিড-ডে মিলের সামগ্রী বিতরণ চলছে। বহু স্কুলে মাধ্যমিকের ফর্ম পূরণ শেষ হয়নি। তার মধ্যে উচ্চ মাধ্যমিকের ফর্ম পূরণে কম সময় দেওয়ায় অসুবিধার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। বীরভূমের বোলপুরের অনেক স্কুলই আগাম ফর্ম পূরণ করিয়েছে। দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট ললিতমোহন আদর্শ হাইস্কুল-সহ বেশ কিছু স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিকের ফর্ম পূরণ হয়ে গিয়েছে আগেই।

এ দিন অনেকে ফর্ম পূরণ করতে না-আসায় পশ্চিম মেদিনীপুরের গোয়ালতোড়ের একটি স্কুলের শিক্ষিকেরা গরহাজির ছাত্রছাত্রীদের বাড়িতে পৌঁছে যান। সেখানে গিয়ে তাঁরা শোনেন, কারও বিয়ে হয়ে গিয়েছে, কেউ কেউ আবার রুজির টানে গাড়ির হেল্পার হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement