উত্তপ্ত সন্দেশখালি। —ফাইল চিত্র।
কখনও এলাকা জুড়ে ১৪৪ ধারা। কখনও পুলিশের রুটমার্চ। গত কয়েক দিনে বারবার তেতে উঠেছে এলাকা। উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা আর আতঙ্ককে সঙ্গী করেই এর মধ্যে এত দিন উচ্চ মাধ্যমিকের জন্য প্রস্তুতি চালিয়েছে সন্দেশখালি ২ ব্লকের ১২৪৯ জন পরীক্ষার্থী। আজ, শুক্রবার থেকে তারা পরীক্ষায় বসছে।
জেলিয়াখালি দ্বীপের এক পরীক্ষার্থী বলল, ‘‘এত গোলমালের মধ্যে কি আর ভাল করে পড়াশোনা করা যায়?’’ আর এক পরীক্ষার্থীর খেদ, ‘‘আমাদের কথা কি নেতারা কেউ ভাবলেন?’’ তার আশা, ‘‘পরীক্ষার মধ্যে যেন আর কিছু না হয়!’’ তবে সন্তানের পড়াশোনায় প্রভাব পড়েছে জানিয়েও এক অভিভাবকের সাফ কথা, ‘‘প্রতিবাদটা প্রয়োজন। শেখ শাহজাহান, শিবু হাজরা, উত্তম সর্দাররা অন্যায় করেও পার পেয়ে যাচ্ছে।’’
এই ব্লকে ৯টি উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল রয়েছে। পরীক্ষাকেন্দ্র হয়েছে দু’টিতে—সন্দেশখালি রাধারানি হাই স্কুল ও জেলিয়াখালি বিবেকানন্দ বিদ্যাপীঠ। এর মধ্যে রাধারানি হাই স্কুল মূল দ্বীপে। এখানেই কিছু দিন আগে প্রথম প্রতিবাদে নামেন গ্রামবাসী। শিবু হাজরার মেছোভেড়িতে হামলা চালান গ্রামবাসী। তাঁর পোলট্রি ফার্মেও ভাঙচুর হয়। ওই স্কুলে পুলিশ ক্যাম্প হয়েছে। পুলিশকর্মীদের ওখানে রাখা হয়েছে। এখানকার ৪৯ জন ছাত্র এবং ৭৯ জন ছাত্রী উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে যাবে বিবেকানন্দ বিদ্যাপীঠে।
রাধারানি হাই স্কুলের পরীক্ষার্থীদের বাড়ি সন্দেশখালির মূল দ্বীপে। এক পরীক্ষার্থীর কথায়, ‘‘প্রস্তুতি যতটা নেওয়া যায়, নিয়েছি।’’ এলাকার পরিস্থিতি নিয়ে সে ভয়ে আছে কি— প্রশ্ন শুনে স্পষ্ট করে কিছু না বলে ফোন রেখে দেয় ছেলেটি।
দাসপাড়ার এক পরীক্ষার্থীর মা বলেন, ‘‘মেয়ে বাড়ি ছিল না। কয়েক দিন হল এনেছি। পুলিশের ধরপাকড়ের ভয়ে স্বামী ঘরছাড়া।’’ রাধারানি হাই স্কুলে পরীক্ষা দিতে আসবে আশপাশের পাঁচটি স্কুলের পরীক্ষার্থীরা। বিডিও অরুণকুমার সামন্ত জানান, বিভিন্ন খেয়াঘাটে ও টোটো, ভ্যান স্ট্যান্ডে জানানো হয়েছে, পরীক্ষার্থীদের যেন সমস্যা না হয়।