প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ মামলায় পর্ষদের গঠিত অ্যাড-হক কমিটির দুই সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে বলল কলকাতা হাই কোর্ট। শুক্রবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ, শনিবার দুপুরের মধ্যে ওই দুই সদস্যকে সিবিআই দফতরে হাজিরা দিতে হবে। বাড়তি ১ নম্বর দেওয়া নিয়ে তাঁরা কবে, কখন বৈঠক করেছিলেন, তা খতিয়ে দেখবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
২০১৪ সালের টেট পরীক্ষায় একটি প্রশ্ন ভুল ছিল বলে দাবি করে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। এর আগের শুনানিতে পর্ষদ আদালতে জানায়, ওই প্রশ্ন এবং তার উত্তরে ভুল রয়েছে কি না, তা যাচাই করতে বিশেষজ্ঞ কমিটির কাছে পাঠানো হয়। কমিটির সদস্যরা একটি সিদ্ধান্ত জানান। পরে বিশেষজ্ঞ কমিটির সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে অ্যাড-হক কমিটি নামে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটিতে ছিলেন পর্ষদের তৎকালীন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য, দেবজ্যোতি ঘোষ, পঞ্চানন রায় এবং সিস্টার এমিলিয়া।
দুই সদস্য দেবজ্যোতি এবং পঞ্চাননকে তলব করে আদালত। অসুস্থতার কারণে আসতে হয়নি সিস্টার এমিলিয়াকে। শুক্রবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ওই দুই সদস্যকে কাঠগড়ায় তুলে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। দেবজ্যোতি জানান, বৈঠক ডেকেছিলেন পর্ষদের সম্পাদক। চার সদস্যই উপস্থিত ছিলেন বৈঠকে। নম্বর বাড়ানো নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তাঁর কথায়, "বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশ মতো একটি প্রশ্নের দু'টি বিকল্পই ঠিক উত্তর হিসাবে ধরা হয়েছিল। সেই অনুযায়ী আমরা সিদ্ধান্ত নিই যে, কোনও একটি বিকল্প বাছলেই ১ নম্বর দেওয়া হবে।"
দেবজ্যোতিকে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় প্রশ্ন করেন, "ওই বৈঠকের সূচিতে (মিনিটস) কি আপনি স্বাক্ষর করেছিলেন?" উত্তর, "ওই বৈঠকের সূচিতে স্বাক্ষর করা হয়নি। কিন্তু পর্ষদের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেছিলাম।" ফের বিচারপতির প্রশ্ন, "আপনি কি জানেন, হাজিরার খাতা এবং বৈঠকের সূচি, দু'টি আলাদা জিনিস? ফলে স্বাক্ষরও আলাদা ভাবে করতে হয়।" দেবজ্যোতির উত্তর, "হ্যাঁ, সেটা আমি জানি। কিন্তু কোনও প্রস্তাবেই সই করিনি।" প্রায় একই যুক্তি শোনা যায় পঞ্চাননের বয়ানেও। তার পরই তাঁদের সিবিআইয়ের কাছে হাজিরা দিতে বলে উচ্চ আদালত।