মঙ্গলবার রাতে ধর্মতলায় অনশন প্রত্যাহার নিয়ে ঘোষণা করছেন আন্দোলনকারীরা। —ফাইল ছবি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের পর সোমবার রাতেই ‘আমরণ অনশন’ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। অনশন তোলার পরেই অনশনকারীদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। গঠন করা হয়েছে মেডিক্যাল বোর্ড। সেই বোর্ডের তত্ত্বাবধানেই চিকিৎসা চলছে। অনশনকারীদের মধ্যে অর্ণব মুখোপাধ্যায়, সায়ন্তনী ঘোষ হাজরা এবং আলোলিকা ঘোড়ুইকে সিসিইউতে রেখে চিকিৎসা করানো হচ্ছে। বাকিদের শারীরিক অবস্থাও পুরোপুরি স্থিতিশীল নয় বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
অনশনকারীদের মধ্যে অর্ণব এবং স্পন্দন চৌধুরী ভর্তি আছেন এসএসকেএম হাসপাতালে। সোমবার রাত থেকেই তাঁদের ফ্লুইড দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের শরীরে কী কী জটিলতা রয়েছে, তা জানার জন্য বিভিন্ন টেস্ট করাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। জানা গিয়েছে, অর্ণবের হাইপোথেরমিয়া রয়েছে। অর্থাৎ দেহের তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে নেমে গিয়েছে। তাপমাত্রা ওঠানামা করছে। যা চিন্তায় ফেলেছে চিকিৎসকদের।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়েছে স্নিগ্ধা, সায়ন্তনী এবং আলোলিকাকে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, সকলের শরীরেই কিটোন বডি রয়েছে। তা কমানোর জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা চলছে। ফলের রস দেওয়া হচ্ছে সকলকে। প্রয়োজন মতো ফ্লুইড দিয়ে শরীরের জলের ঘাটতি মেটানোর চেষ্টা চলছে। উল্লেখ্য, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজেই ভর্তি আছেন তনয়া পাঁজা। ১৪ অক্টোবর তাঁকে ভর্তি করানো হয়েছিল। বর্তমানে তাঁর শারীরিক অবস্থা অনেকটাই স্থিতিশীল। মঙ্গলবারই তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হতে পারে।
অন্য দিকে, উত্তরবঙ্গে অনশনরত জুনিয়র ডাক্তার সন্দীপ মণ্ডলকে সোমবার রাতে সিসিইউতে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। সেখানেই তাঁর চিকিৎসা চলছে। বিগত দু’-তিন দিন ধরে তাঁর হৃৎস্পন্দন খানিকটা কম ছিল। মঙ্গলবার পর্যবেক্ষণে রাখা হবে তাঁকে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, বুধবারের মধ্যে হয়তো ছুটি দেওয়া হতে পারে সন্দীপকে।
গত ৫ অক্টোবর ধর্মতলায় অনশনে বসেছিলেন মোট ছ’জন। তবে তাঁদের মধ্যে এসএসকেএমের অর্ণব, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের স্নিগ্ধা এবং কেপিসি মেডিক্যাল কলেজের সায়ন্তনী সোমবার পর্যন্ত অনশন চালিয়ে গিয়েছেন। অনশনরত অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়ায় বাকিদের হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। ৬ অক্টোবরে অনশনে বসেন আরজি করের অনিকেত মাহাতো এবং উত্তরবঙ্গের দুই জুনিয়র ডাক্তার অলোক বর্মা এবং সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়। ১১ অক্টোবর অনশনে বসেন কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের সার্জারি বিভাগের পিজিটি অলোলিকা এবং ভিআইএমএস (শিশুমঙ্গল) হাসপাতালের ইনএনটি (নাক, কান, গলা) বিভাগের পিজিটি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র পরিচয় পণ্ডা। ১৫ অক্টোবর থেকে অনশনে বসেন রুমেলিকা কুমার এবং স্পন্দন চৌধুরী। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে গত ১৪ অক্টোবর থেকে অনশনে ছিলেন সন্দীপ।