Alcohol

‘মদ্যপান করবে যারা, তাদের মাথায় পড়ুক বাজ’! চিকিৎসকদের বৈঠকে মদ বন্ধে চিঠি কেন্দ্রের

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যকর্তাদের বক্তব্য, চিকিৎসকদের এই পদক্ষেপ সমাজের কাছে বড় উদাহরণ হয়ে উঠতে পারে। তাতে আগামী দিনে বিভিন্ন সম্মেলন, কর্মশালায় মদ্যপান বন্ধ করার কথা সহজেই বলা সম্ভব হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০২৩ ০৬:৪৫
Share:

রোগীদের সুরাপান বন্ধ করতে বলার আগে সেই বিষয় থেকে দূরে থাকতে হবে চিকিৎসকদেরও। প্রতীকী ছবি।

আপনি আচরি ধর্ম। রোগীদের মদ্যপান বন্ধের ‘ধর্ম’ পালনের পরামর্শ দেওয়ার জন্য চিকিৎসকদের আহ্বান জানাচ্ছে কেন্দ্র। তার প্রথম উদ্যোগ হিসেবে চিকিৎসকদের সম্মেলন ও কর্মশালায় ‘বেয়ারা, চালাও ফোয়ারা/জিন, শেরি, শ্যাম্পেন, রাম’ গোছের দৃশ্যে ইতি টানতে বলছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক।

Advertisement

সেই শেষের কাজটা শুরু করার দায়িত্ব চিকিৎসকদেরই নিতে বলছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। তাই চিঠি পাঠিয়ে সব চিকিৎসক সংগঠনের কাছে আবেদন করা হয়েছে, রোগীদের সুরাপান বন্ধ করতে বলার আগে সেই বিষয় থেকে দূরে থাকতে হবে চিকিৎসকদেরও।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যকর্তাদের বক্তব্য, চিকিৎসকদের এই পদক্ষেপ সমাজের কাছে বড় উদাহরণ হয়ে উঠতে পারে। তাতে আগামী দিনে বিভিন্ন সম্মেলন, কর্মশালায় মদ্যপান বন্ধ করার কথা সহজেই বলা সম্ভব হবে। গত সপ্তাহে ডিরেক্টর জেনারেল অব হেল্থ সার্ভিস (ডিজিএইচএস) অতুল গোয়েল দেশের সব চিকিৎসক সংগঠনকে চিঠি লিখেছেন। তাতেই বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, চিকিৎসকদের বিভিন্ন সম্মেলন, আলোচনাচক্র, কর্মশালা, শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানের পরে যে-ককটেল লাঞ্চ বা ডিনার থাকে, সেখানে মদ্যপানের কোনও রকম বন্দোবস্ত রাখা উচিত নয়। চিকিৎসকেরা যদি সেটা করতে পারেন, তা হলে দৃষ্টান্ত স্থাপন তো হবেই, এমনকি সেই সু-অভ্যাস অন্যদেরও অনুপ্রাণিতও করবে।

Advertisement

চিঠিতে বলা হয়েছে, দেশে নন-কমিউনিকেবল রোগে মৃত্যুর হার ৬৩%। সব চেয়ে বেশি হৃদ্‌রোগ (২৭%)। এ ছাড়াও রয়েছে শ্বাসনালির অসুখ (১১%), ক্যানসার (৯%), ডায়াবিটিস (৩%) এবং অন্যান্য অসুখ (১৩%)। আর এই সব রোগের নেপথ্যেই রয়েছে তামাক সেবন ও মদ্যপান। আবার ব্রেন স্ট্রোক, দুর্ঘটনার অনেক ক্ষেত্রেও দায়ী মদ্যাসক্তি। তাই চিকিৎসকদের দিয়েই অর্থাৎ নিজেদের ঘর থেকেই এমন সু-অভ্যাস চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। এই উদ্যোগটিকে স্বাগত জানান ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (আইএমএ) সর্বভারতীয় মহাসচিব অনিল নায়েক। অ্যাসোসিয়েশন অব হেল্থ সার্ভিসেস ডক্টর্সের সাধারণ সম্পাদক মানস গুমটা বলেন, “সমাজের সব স্তরেই এই নিয়ম কার্যকর হওয়া উচিত। বিভিন্ন রাজ্যে মুড়িমুড়কির মতো মদের দোকানের লাইসেন্স দেওয়া বন্ধ করা প্রয়োজন।”

চিকিৎসকদের বড় অংশই এখন মদ্যপানের বিরুদ্ধে সরব। কলকাতার এক প্রবীণ চিকিৎসকের সহাস্য মন্তব্য, “আমরা যেটা করতে রোগীকে বারণ করি, সেটি নিজেরা করলে তো ভুল বার্তা যাবেই। তাই এ বার থেকে বলতে হবে, ‘মদ্যপান করবে যারা, তাদের মাথায় পড়ুক বাজ’।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement